কলকাতার দমদম কারাগারে আটক যুদ্ধাপরাধ ট্রাই-ব্যুনালের আলোচিত সাক্ষী সুখরঞ্জন বালীকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে ভারতের সুপ্রিমকোর্ট।
বাংলাদেশে ফেরত পাঠালে তার জীবন বিপন্ন হতে পারে—এমন আশঙ্কা জানিয়ে বালী আবেদন করলে শুক্রবার আদালত তা মঞ্জুর করে এ স্থগিতাদেশ দেন বলে জানিয়েছে কলকাতার টেলিগ্রাফ পত্রিকা। এর আগে হাইকোর্ট বালীর আবেদন স্থগিত করে দিলে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন তিনি। শুক্রবার তার আইনজীবী কলিন গনজালভস এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে বেঞ্চের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, অন্যথায় তাকে যে কোনো মুহূর্তে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
বিচারপতি বিএস চৌহান এবং বিচারপতি এসএ ববদের বেঞ্চ আদেশে বলেন, আগামী ৭ আগস্ট কলকাতার হাইকোর্ট বালীর আবেদনের শুনানিতে প্রয়োজনে স্থগিতাদেশ বাড়ানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
ভাতিজার মাধ্যমে করা এক আবেদনে বালী দাবি করেন, তিনি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি মামলায় শুরুর দিকে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী ছিলেন। পক্ষ ত্যাগ করে আসামিপক্ষে সাক্ষী দিতে গেলে ২০১২ সালের নভেম্বরের দিকে ঢাকায় ট্রাইব্যুনাল গেট থেকে নিরাপত্তা বাহিনী তাকে অপহরণ করেন। এরপর তাকে ভারতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
এর আগে গণমাধ্যমকে বালী বলেছিলেন, তিনি আদালতে বলবেন বিশা বালিকে সাঈদী হত্যা করেনি। অথচ এ হত্যার অভিযোগে সাঈদীকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল, যাকে বিতর্কিত বলে মন্তব্য করছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
এপ্রিল মাসে উত্তর পরগনার বসিরহাট আদালত ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে বালীকে ১১০ দিনের সাজা দেয়। বালীর সাজাভোগ শেষ হয়েছে। এখন যে কোনো মুহূর্তে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে আশঙ্কা করছেন তিনি।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচও সম্প্রতি বলেছে, বালীকে বাংলাদেশ পাঠানো হলে তার জীবন বিপন্ন হতে পারে। বালীর জীবনরক্ষায় জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চেয়েছে মানবাধিকার সংগঠনটি।
প্রসঙ্গত, সুখরঞ্জন বালী কলকাতার দমদম কারাগারে আটক রয়েছেন বলে সম্প্রতি খবর প্রকাশ করে ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ এবং তাকে দেখতে পরিবারের সদস্যরা সেখানে যায়।
ট্রাইব্যুনাল গেট থেকে অপহরণের বর্ণনা দিয়ে বালী বলেন, সাদা পোশাকের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাকে অপহরণ করে। এরপর তাকে কয়েকদিন অজ্ঞাত স্থানে বন্দি রাখা হয়।
সে সময় তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। তবে ‘কেন আমি সাঈদী সাহেবের পক্ষে এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল…। তারা বলেছে আমাকে হত্যা করা হবে এবং সাঈদী সাহেবকে ফাঁসিতে ঝুলানো হবে।’