| বুধবার, ২৬ মার্চ ২০১৪ | প্রিন্ট
২৬ মার্চ: বিএনপি‘র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জিয়াউর রহমান শুধু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ঘোষকই ছিলেননা তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান। এটাই সত্য, আর এটাই ইতিহাস। জিয়াউর রহমান ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এনিয়ে কোন বিতর্ক নেই। শেখ মুজিবও এনিয়ে বিতর্ক করেননি, বরং শেখ মুজিবকে বিতর্কিত করেছে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনায় অংশ নিয়ে কার্ডিফ বিশ্ব¦বিদ্যালয়ের সাবেক প্রফেসর ডক্টর এম এ মালেক বলেন, ১৭ এপ্রিল অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়। সেই সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। কিন্তু এর আগে রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন জিয়াউর রহমান। তিনিই বাংলাদেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট। যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস। সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদ।
সভায় তারেক রহমান বলেন, ৭ মার্চ কিংবা ২৫ মার্চ কোন তারিখেই শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। এমনকি তার দেয়ার ইচ্ছেও ছিলোনা। যদিও স্বাধীনতাকামী জনগণ তৎকালীন রাজনৈতিক নেতৃত্বের মুখে স্বাধীনতার ঘোষণা শুনতে চেয়েছিলো, কিন্তু তারা জনগণের মনের ভাষা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে জিয়াউর রহমান সফল। সেদিন ৭ কোটি বাঙালির স্বাধীনতার আকাংখা অনুযায়ী জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তারেক রহমান তার ৩৬ মিনিটের বক্তৃতায় বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য ও দলিল উপস্থাপন করে বলেন, ৭ ই মার্চ কিংবা ২৫ শে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণার পক্ষে একটি প্রমানও আওয়ামী লীগ উপস্থাপন করতে পারেনি। তারেক রহমান ৭১ সালের ৮ ই মার্চে দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত শেখ মুজিবের ৭ই মার্চের ভাষণের রিপোর্টের একটি কপি দেখিয়ে বলেন, ভাষনটি স্বাধীনতা ঘোষণা হলে পত্রিকায় প্রকাশিত হলোনা কেন? আসলে বাস্তবতা হলো ৭ মার্চের ভাষনের পরও শেখ মুজিব তৎকালীন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ১৬, ১৭, ১৯,২০,২১, ২৩ এবং ২৪ মার্চ পাকিস্তানীদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। এমনকি বৈঠকে ৪ দফা চুক্তিতেও উপনীত হয়েছিলেন।
৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষনা হলে, এ ধরণের বৈঠক হতে পারেনা। আসলে শেখ মুজিবের কোন যুদ্ধ পরিকল্পনা ছিলোনা। একইভাবে তিনি বলেন, যারা দাবী করেন শেখ মুজিব ২৫ মার্চে স্বাধীনতার একটি ঘোষনাপত্র চট্টগ্রামে পাঠিয়েছিলেন সেটিরও কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। তিনি ২৭ মার্চ চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত পত্রিকার একটি কপি দেখিয়ে বলেন, ২৫ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা হলে পত্রিকায় সেটি প্রকাশিত হলোনা কেন? অথচ একই পত্রিকায় শেখ মুজিবের সারা বাংলায় অবরোধের ডাক সংক্রান্ত একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছিলো। তারেক রহমান আরো প্রশ্ন করেন, শেখ মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করলে পূর্ববাংলায় অবরোধ ডাকলেন কার বিরুদ্ধে। তারেক রহমান বলেন, মিথ্যাচার কিংবা ইতিহাস বিকৃতি নয়, তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এসব প্রশ্নের জবাব এখন সময়ের দাবী। তিনি বলেন, বিএনপি তথা জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতিটি নেতাকর্মীদের মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান। অনুষ্ঠানে তারেক রহমান বলেন, ৬ দফা অন্দোলনে শেখ মুজিব ভুমিকা রেখেছিলেন এ নিয়ে কেউ বিতর্ক করছেনা। অনুষ্ঠানে তারেক রহমান বলেন, কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী, ৬ দফা অন্দোলনে শেখ মুজিব ভুমিকা রেখেছিলেন এ নিয়ে কেউ বিতর্ক করছেনা। কিন্তু তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষনা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
তারেক রহমান বলেন, “আমরা সবাই জানি শেখ মুজিবের বাড়ি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে। স্বাধীনতার সময়ে হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে প্রচুর বিদেশি সাংবাদিক ছিল..। “আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বলেন, শেখ মুজিব চিরকুটের মাধ্যমে ওয়ারলেসে করে নাকি চট্টগ্রামে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠিয়েছিলেন। কাছের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে চিরকুট না পাঠিয়ে উনি কেন তা দুইশ’ মাইল দূরে চট্টগ্রামে তা পাঠালেন?” তার কোন যুদ্ধ পরিকল্পনাও ছিলোনা। সভায় আরো বক্তৃতা করেন, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার এম কায়সার কামাল, বিএনপি‘র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান, ইউরোপভিত্তিক প্রবাসী বাংলাদেশীদের সংগঠন সিটিজেন মুভমেন্টের আহবায়ক এম এ মালেক, যুক্তরাজ্য বিএনপি‘র সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন এবং ব্যারিস্টার এম এ সালাম এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রফেসর ড. মুজিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে তারেক রহমান যুক্তরাজ্য জাসাস নির্মিত একটি ওয়েসাইট www.ghoshona26march.com উদ্বোধন করেন। এই ওয়েবসাইটে মুক্তিযুদ্ধে মেজর জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষনা এবং মুক্তিযুদ্ধের নানাতথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
Posted ১১:২২ | বুধবার, ২৬ মার্চ ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin