| শুক্রবার, ৩১ আগস্ট ২০১৮ | প্রিন্ট
মুজিবুর রহমান, ছাতকঃ ছাতক উপজেলার দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রামে রয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি দ্বিতল বিশিষ্ট ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র। বৃহত্তর ইউনিয়নের ৩৮ টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষের তৃণমুল স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র কেন্দ্র এটি। স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্রে ১ জন এমবিবিএস ডাক্তার, ১জন মেডিক্যাল অফিসার, একজন ভিজিটর, একজন অফিস সহকারী থাকলেও অভিযোগ উঠেছে সেবা নিয়ে ।
সপ্তাহের বেশির ভাগ দিনেই তালা ঝুলে থাকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান ফটকে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির দীর্ঘদিনের এমন অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষ। স্বাস্থ্য সেবার মান ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের তাগিদ স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের। তবে সপ্তাহের প্রতিদিনই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি খোলা থাকে ও সেবার ক্ষেত্রেও আন্তরিক বলে দাবি করেছেন ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির সহকারী মেডিকেল অফিসার সিরাজুল ইসলাম।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, মহব্বতপুর ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে র্দীঘদিন ধরে ডাক্তার আসেন না। অফিস সহকারি প্রতিদিন দেরী করে আসলেও অনিমিয়ত থাকেন সহকারী মেডিক্যাল অফিসার ও ভিজিটর। সপ্তাহে মাঝে মধ্যে আসলেও ঘন্টা দুয়েক অবস্থান করে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তালা ঝুলিয়ে চলে যান তাঁরা।
সপ্তাহের কিছু কিছু দিন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বন্ধ থাকতে দেখা গেলেও এলাকাবাসী কারণ জানতে চাইলে নানান অজুহাত দেখান সহকারি মেডিক্যাল অফিসার। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ি রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে কয়েক ধরনের ঔষুধ বিনামূল্যে পাওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে ঔষুধের দেখা মিলে খুবই কম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় বাজারে সহকারী মেডিক্যাল অফিসার সিরাজুল ইসলামের একটি নিজেস্ব ফামের্সি রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে সেখানে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঔষধ সেখানে চলে যায়। সেবার বিনিময়ের টাকা নেয়ারও অভিযোগ। এদিকে ডাক্তার সর্ম্পকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডাক্তার ওমর ফারুক ছাতক উপজেলা শহরে রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। দায়িত্ব এড়িয়ে করছেন বাড়তি আয়।
মহব্বতপুর গ্রামের বাসিন্দা কুসুম আলী বলেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গেলে কোন ডাক্তার পাওয়া যায় না। প্রতিদিনই তালা লাগাইল থাকে কেন্দ্রটিতে। এইখানে কোন সেবা মানুষ পায় না। রোগী নিয়া আইলে ফিরত যাওয়া লাগে। খুরমা গ্রামের ফকির আলী আরেক বাসিন্দা জানান,সহকারি মেডিক্যাল অফিসার মাঝে মধ্যে আইলেও ঘন্টা দুয়েক থাইক্কা তালা লাগাইয়া যায়গি তাঁরা।
হুনলাম ইখানে সরকারে বিনা মূল্যে ঔষুধ দেয় কিন্তু স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঔষুধ যায় কোয়াই। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির সেবার মান নিয়ে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও। দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মছব্বির বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির বেহাল অবস্থা ও সেবার মান সম্পর্কে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে আসছি। কিন্তু কোন ফলাফল হচ্ছে না।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে সাধারণ মানুষ কোন সেবা পায় না। ডাক্তার ও সহকারি মেডিক্যাল অফিসার নিয়মিত আসে না। প্রায় দিন তালা ঝুলতে দেখা যায় দরোজায়। এ ব্যাপারে সিভিল সার্জনের সুনজর কামনা করছি। সিভিল সার্জন আশুতোষ দাস বলেন, আমি সিভিল সার্জান পদে সদ্য যোগদান করেছি, স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির পূর্ব অবস্থা সম্পর্কে অবগত নই। তবে নিয়োগ নেয়ার পর থেকে জেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে আমি আন্তরিক।
মহব্বতপুর ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির ডাক্তার ২ মাসের ফাউন্ডেশন কোর্সে রয়েছেন। তাঁর পরিবর্তে বাড়তি দায়িত্ব পালনের জন্যে সহকারি মেডিক্যাল অফিসারকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হবে।
Posted ১১:০০ | শুক্রবার, ৩১ আগস্ট ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin