| শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট
আমদানি করা গ্যাসের দাম বেশি পড়বে-এই যুক্তিতে সরকার গ্যাসের দাম বাড়ালেও বিএনপি বলছে, দাম বৃদ্ধির কারণ এটা নয়। সরকার লুটপাট চালাতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গ্যাসের এই মূল্যবৃদ্ধি মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়াবে।
শুক্রবার নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা এই কথা বলেন। বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় দাবি করে রিজভী বলেন, এ জন্যই সরকার এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা এসেছে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের পক্ষে থেকে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী সাড়ে তিন মাসে গ্যাসের দাম বাড়বে দুই দফায়। এর মধ্যে মধ্য মার্চ থেকে এক চুলার মাসিক বিল হবে ৭৫০ টাকা। আর দুই চুলার বিল হবে ৮০০ টাকা। আর তিন মাস পর জুন থেকে এই বিল চুলাপ্রতি আরও ১৫০ টাকা করে বাড়বে। তখন এক চুলার বিল হবে ৯০০ টাকা এবং দুই চুলার ৯৫০ টাকা। বর্তমানে এক চুলার বিল ৬০০ টাকা আর দুই চুলার বিল সাড়ে ছয়শ টাকা।
আবাসিকের পাশাপাশি দাম বেড়েছে বাণিজ্যিক এবং পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা তরল গ্যাস-সিএনজিরও। খাত ভেদে ৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত দাম বাড়ানো হয়েছে। সব মিলিয়ে গড়ে দাম বেড়েছে ২২ শতাংশের বেশি।
গ্যাস বিতরণে সব কটি কোম্পানি লাভে থাকলেও বর্তমান এই দাম বৃদ্ধি মূলত বিদেশ থেকে আমদানি করা গ্যাসের দামের কারণে। বাংলাদেশে গ্যাসের মজুদ দ্রুত কমে আসছে এবং সরকার এলএনজি আমদানি করে চাহিদা মেটানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
বর্তমানে প্রতি মিলিয়ন ঘনফুট তিতাস গ্যাসের (এমএমসিএফডি) বিক্রয়মূল্য হচ্ছে ২.৪ ডলার। কিন্তু আমদানি করা গ্যাসের দাম প্রায় ৯ ডলার। দুটি মিলিয়ে তখন ওই গ্যাসের দাম পড়বে প্রতি মিলিয়ন ঘনফুট ৪ থেকে ৫ ডলার। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ অতিরিক্ত ২.৫ মার্কিন ডলারের দাম সমন্বয় করার জন্যই গ্যাসের দাম আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছে সরকারি সূত্রগুলো।
রিজভী বলেন, ‘সব কটি বিতরণ কোম্পানিগুলো লাভজনক অবস্থায় থাকলেও সীমাহীন লুটপাটের জন্যই গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে সরকার। আওয়ামী লীগ সরকার তিন বারে গ্যাসের মূল্য পাঁচ গুণ বাড়িয়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির খড়্গ পড়বে সাধারণ মানুষের ঘাড়ে। এর প্রভাব পড়বে সব সেক্টরে। এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে, শীতের মৌসুমেও এমন কোনো সবজি নেই যেটি ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যায়। চালের দাম বেড়েছে কয়েক গুণ, অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যও আকাশছোঁয়া। বাড়ি ভাড়া বেড়েছে। এই অবস্থায় গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘যেহেতু বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তাই তাদের মানুষের ওপর দরদ নেই। তারা মনে করে বাংলাদেশের সবকিছুই আওয়ামী লীগের মালিকানায়। সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রহীন দেশে বন্দুকের জোড়ে যেন জুলুমের শাসন চলছে। এত জুলুম নির্যাতন, গুম, খুনে মানুষ প্রতিবাদের ভাষাও আজ হারিয়ে ফেলেছে।’
গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে বিএনপি কোনো কর্মসূচি দেবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, ‘এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা হলেই আপনারা জানতে পারবেন।
Posted ০৮:২৮ | শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain