ক্ষমতায় থাকতে সরকার যা ইচ্ছে তাই করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

জনগণ সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ সরকারকে যত দ্রুত সম্ভব বিদায় করবে।

শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘মহান বিজয় দিবস ও বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এই সরকারকে বিদায় দেওয়ার জন্য একমত হয়েছে। এটা বিএনপি’র গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে। ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের কেন্দ্র করে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যে বর্বরতা ঘটিয়েছে এমন ঘটনা পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীও ঘটায়নি। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সময়ও এ ধরনের ক্রাকডাউন আমাদের বাহিনী কোথাও করেছে কিনা জানি না। এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যা ইচ্ছে তাই করছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমেরিকার রাষ্ট্রদূত গুম হওয়া একটি পরিবারের খোঁজখবর নিতে গিয়েছেন সেখানে সরকারের পেটুয়া বাহিনী তাকে অপমান করেছে। এগুলো সরকার কিভাবে লুকিয়ে রাখবে।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপি কোন সমাবেশের ঘোষণা করলেই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে বলানো হয় আমরা সমাবেশ করতেছি ভায়োলেন্স করার জন্য, আমরা সমাবেশ করতেছি অরাজগতা সৃষ্টির জন্য। আমরা দশটি সমাবেশ করেছি, প্রতিটি সমাবেশে তাদের পেটুয়া বাহিনী বিএনপি নেতাকর্মীদের সমাবেশে যেতে দেয়নি যানবাহন বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু দেশের জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমাবেশ অংশগ্রহণ করেছে, তারা সমাবেশ সফল করেছে। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। এটার জন্য আমাদের ভাড়াটিয়ার প্রয়োজন হয়নি। জনগণ দেখেছে, এছাড়া আন্তর্জাতিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।

ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার সব সত্য ঘটনাকে বিকৃত করছে দাবি করে তিনি বলেন, তাদের এই ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে জনগণের যে ১০ দফা দাবি এটা বিএনপির প্লাটফর্ম থেকে ঘোষণা করা হয়েছে। জনগণের এ দাবি আদায়ের জন্য আমাদের আরও বেশি সক্রিয় হতে হবে, শক্তি সঞ্চার করতে হবে।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, আওয়ামী লীগ যদি গায়ের জোরে এভাবে ক্ষমতা থাকে তাহলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে না। যে অর্থনীতি তারা ধ্বংস করেছে এ অর্থনীতির পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে না। যে বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে সে বিচার ব্যবস্থাকে স্বাধীন করতে পারবে না। আজকে দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি এটাকে রুখতে পারবে না। যারা এজন্য দায়ী তারা কিভাবে রুখবে।

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, প্রমাণ রয়েছে জনগণ এরশাদের স্বৈরতন্ত্র গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিদায় করেছে। পাকিস্তানের আইয়ুব খানকে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিদায় করেছে। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় রাজাপাকশে একজন প্রেসিডেন্ট একজন প্রাইম মিনিস্টার তাদের ১৮ বছরের রাজত্ব, জনগণ যখন রাস্তায় নেমেছে তাদের ১৮ বছর রাজত্ব উড়ে গিয়েছে। অতঃপর জনগণের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছে। শ্রীলঙ্কা করতে পেরেছে, এরশাদের বিরুদ্ধেও আমরা করতে পেরেছি, তাহলে এখন কেন আমরা করতে পারব না।

‘জনগণ দেশের সংকট মোকাবেলা করেছে এবং ভবিষ্যতে করবে। দেশের সংকট রাস্তায় মোকাবেলা করে তারা সমাধান করবে এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে।’- বলেন খন্দকার মোশাররফ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন। সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক নেতা আব্দুল কাদের গণি চৌধুরী।