| বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট
বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে কানাডার একটি আদালতের রায়ে হতভম্ভ বিএনপি নেতারা। এ বিষয়ে এখনও পূর্ণাঙ্গ তথ্য জানা-বোঝার চেষ্টা করছেন নেতারা। দলের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন, এই রায় দুঃখজনক। আর এ বিষয়ে দল থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আসবে বলে জানিয়েছেন আরেকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা।
কানাডাভিত্তিক অনলাইন বাংলা সংবাদপত্র নতুন দেশে প্রকাশিক একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপির সদস্য হওয়ার কারণে একজন বাংলাদেশির রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন নাকচ করে দিয়েছিলেন সে দেশের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা। এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন ওই ব্যক্তি। আর জুডিশিয়াল রিভিউর আবেদন নিষ্পত্তি করতে বিচারক বলেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।
নতুন সময়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোহাম্মাদ জুয়েল হোসেন গাজী নামে ঢাকার মিরপুরের স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন কর্মীর রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন নাকচ হওয়ার পর তিনি ফেডারেল কোর্টে এই জুডিশিয়াল রিভিউর আবেদন করেন। ওই আবেদনের নিষ্পত্তি করে গত ২৫ জানুয়ারি রায় দেন ফেডারেল কোর্টের বিচারক হেনরি এস ব্রাউন। এতে বিচারক বলেন, ‘বিএনপি সন্ত্রাসী কার্যলিপ্ত ছিল, আছে বা লিপ্ত হবার লিপ্ত হবে’ তা বিশ্বাস করার যৌক্তিক কারণ আছে- এই মর্মে ইমিগ্রেশন অফিসার যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তা যৌক্তিক বলে আমি মনে করি।’
স্বভাবতই কানাডা আদালতের এই রায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় ফেলেছে। বিএনপি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দেয়নি। তবে দলের দুইজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলেছে এ নিয়ে। তারা দুজনই এই রায় বিয়ে বিব্রত।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এটা কতটুকু সত্য আমি জানি না। তবে যদি হয় সেটাও একজন ব্যক্তির বিষয়ে বলা হয়েছে। সুতরাং ঢালাওভাবে বিএনপির মতো একটা বৃহৎ রাজনৈতিক দলকে নিয়ে কানাডার মতো একটি দেশের আদালতের এমন বক্তব্য দুঃখজনক।’
মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা একজন ন্যয়পরায়ণ, নিষ্ঠাবান মানুষ। তার গড়া দল দীর্ঘদিন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে এবং একটি গণতান্ত্রিক দল।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক দেশের প্রধান বিরোধীদলের সম্পর্কে ঢালাওভভাবে এমন মন্তব্য দুঃখজনক। বিষয়টি নিয়ে দলের পক্ষ থেকে আশা করি বক্তব্য আসবে। তবে আমি ব্যক্তিতগভাবে মনে করি কানাডার ওই বিচারকের সামনে যেসব তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়েছে তিনি হয়তো সেগুলোর আলোকে এই মন্তব্য করেছেন।’
খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘যে ব্যক্তি রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন তিনি আদৌ বিএনপি করেন কি না তাও আমরা স্পষ্ট নই। তবে আদালত কিন্তু আওয়ামী লীগ সম্পর্কে একই ধরণের কথা বলেছেন।’
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপির নজিরবিহীন নাশকতার ঘটনাটিই মূলত উঠে এসেছে কানাডা আদালতের রায়ে। এ বিষয়ে খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক দেশে সরকার ও বিরোধী দল যখন একে অপরের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে তখন অনেক ঘটনা ঘটে। এটা আওয়ামী লীগের সময়ও হয়েছে, এরশাদের সময়ও হয়েছে। কিন্তু এই ঘটনাকে সামনে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে আদালতের বক্তব্য দুঃখজনক। এখানে কোনো সন্ত্রাসী নেই।’
এই রায়ের পর বিএনপি কী করবে-জানতে চাইলে এই আইনজীবী নেতা বলেন, ‘আশা করি আমাদের দলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং বিশ্বাস করি উচ্চ আদালতে এর অবশ্যই সুরাহা হবে।’
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বলেন, আমি এ বিষয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না। কারণ আমার কাছে কোনো তথ্য উপাত্ত নেই। তাই মুখপাত্র এ নিয়ে কথা বলবেন।
Posted ০৬:৩১ | বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain