ডেস্ক রিপোর্ট | মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
যুক্তরাষ্ট্র ফুটবল যুদ্ধে ১-০ গোলে ইরানকে হারিয়ে নিশ্চিত করল রাউন্ড অফ সিক্সটিনের টিকিট। বিশ্ব রাজনীতিতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের দা কুমড়ার সম্পর্ক হলেও ফুটবল মাঠে তারা বড্ড অচেনা প্রতিপক্ষ। বিশ্বকাপ আসরে দু’দলের লড়াই সেই এক বারই হয়েছিল। ১৯৯৮ সালের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে সেই আসর থেকে একমাত্র জয় নিয়ে দেশে ফিরে ইরান। কাতার বিশ্বকাপে বি গ্রুপের বাঁচা-মরার লড়াইয়ে নিজেদের শেষ ম্যাচে আল থুমামা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টায় মুখোমুখি হয় বর্তমান রাজনৈতিক বিশ্বের চরম বৈরী দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান। ইরানকে ১-০ গোলে হারিয়ে ম্যাচে শেষ হাসি হাসল পুলিশিচরাই।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই ইরানের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। ম্যাচের শুরুর মিনিটেই ফ্রি কিক পায় ইরান, তবে সেটি কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় তারা। পঞ্চম মিনিটে ইরানি ফুলব্যাক রেজাইয়ানের ক্রস বক্সের ভেতর কাজে লাগাতে পারেনি কেউ। ম্যাচের শুরুর ১৫ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের সব আক্রমণ আসে ফুলব্যাক রবিনসনের পা থেকে, তবে তার বানানো সুযোগগুলো কাজে লাগাতে ব্যর্থ হোন অন্যরা। একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে ইরানের রক্ষণ দূর্গে। ফলাফল পেতেও খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি মার্কিনিদের।
যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচের সর্বপ্রথম বড় সুযোগ পায় ২৮ মিনিটে, উইয়াহের হেডার ঠেকিয়ে দেন ইরানি গোলরক্ষক বেইরানভান। ম্যাচের ৩১ মিনিটে গোল করার সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হোন ইরান ফরোয়ার্ড নুরুল্লাহী।
ম্যাচের ৩৬ মিনিটে কর্নার পায় ইউএসএ। এর ২ মিনিট পরই ম্যাচের ৩৮মিনিটের সময় সার্জিনো ডেস্টের করা দারুণ এক হেড থেকে বল পেয়ে নিখুঁত ফিনিশিং এ জালে জড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে দেন চেলসি ফরোয়ার্ড তারকা ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচ।
দেশের হয়ে এটি তার ২১তম গোল। এগিয়ে যাওয়ার পরও একের পর এক সুযোগ তৈরি করতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। ৪৩ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়েই যেত যদি না ইরানের সেন্টারব্যাক হোসেইনি চমৎকারভাবে বাধা না দিতেন। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল আরো একবার। কিন্তু টিমোথি ওয়ে’র গোলটি অফসাইডের কারণে বাতিল হলে ১-০ গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় গ্রেগ বেরহল্টারের শিষ্যরা।
পিছিয়ে পড়ে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই চোটের কারণে ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচকে মাঠ থেকে তুলে নিয়ে ব্রেন্ডন এ্যারনসনকে মাঠে নামান কোচ বেরহাল্টার। প্রথমার্ধের তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধে বেশ গোছানো ফুটবল খেলতে থাকে ইরান। অন্যদিকে এগিয়ে থাকায় কিছুটা রক্ষণাত্মক ভঙ্গীতেই খেলছিল যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় হাফে একটিও অন টার্গেট শট নেয়নি ইউএসএ, বিপরীতে একের পর এক আক্রমণ চালাতে থাকে ইরান। তবে ফলাফলে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
ম্যাচের ৫২ মিনিটে ম্যাচে ইরানের সেরা চান্স ক্রিয়েট করেন রেজাইয়ান, তবে তা ভালোভাবে হেড করতে ব্যর্থ হোন ঘোদোস।
মোট পাঁচজন খেলোয়াড়কে বদলি হিসেবে নামান ইরান কোচ কার্লোস কুয়েরো। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রও তাদের বেঞ্চ থেকে পাঁচজন খেলোয়াড়কে বদলি হিসেবে মাঠে নামায়। এরপরে হালকা মেজাজে খেলে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। জয় তুলে নিতে কোনো সমস্যাই হয়নি। তাদের গোলমুখে কোনো হুমকিই তৈরি করতে পারেনি ইরানের খেলোয়াড়েরা। শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের জয়ে ৩ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে বি গ্রুপ থেকে রানার্সআপ হয়ে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়ে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে ৩ ম্যাচ থেকে ১ জয় ও ২ পরাজয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থেকে বিশ্বকাপ আসর শেষ করল ইরান।
Posted ২১:০০ | মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin