বৃহস্পতিবার ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

ইউক্রেনে আধুনিক ট্যাংক পাঠাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে আমেরিকা-জার্মানি

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট

ইউক্রেনে আধুনিক ট্যাংক পাঠাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে আমেরিকা-জার্মানি

কয়েকমাস যাবত অনিচ্ছার পরে আমেরিকা এবং জার্মানি ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য ট্যাংক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব ট্যাংক ইউক্রেনের হাতে আসলে যুদ্ধের মোড় ঘুরে যেতে পারে বলে তারা আশা করছে।

 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন অন্তত ৩০টি এম ওয়ান আব্রামস ট্যাঙ্ক পাঠানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ অন্তত ১৪টি লেপার্ড টু ট্যাঙ্ক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

 

আমেরিকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত এসব খবরকে ‘সরাসরি উস্কানি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, এসব ট্যাংক যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার কাছে হারানো এলাকা পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করবে।

 

ইউক্রেনে ট্যাংক পাঠনোর জন্য আমেরিকা এবং জার্মানি এতোদিন ধরে দেশের ভেতরে এবং বাইরে নানা চাপ উেপক্ষা করেছে।

 

ওয়াশিংটন বলছে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির আব্রামস ট্যাংক পরিচালনার জন্য ব্যাপক প্রশিক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন।

 

অন্যদিকে বার্লিন আশংকা করছে ট্যাংক সরবরাহের মাধ্যমে নেটো রাশিয়ার বিপক্ষে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে যাচ্ছে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম বলছে, জার্মানির তরফ থেকে আমেরিকাকে অনানুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছিল যে আমেরিকা যদি এম ওয়ান আব্রামস ট্যাংক ইউক্রেনে পাঠায় তাহলে জার্মানিও লেপার্ড টু ট্যাংক পাঠাবে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ৩০টি ট্যাংক পাঠানো হতে পারে।

ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর এবং বাইডেনের সহযোগী ক্রিস কুনস সংবাদ মাধ্যম পলিটিকোকে বলেন, “যদি জার্মানরা বলে যে, আমেরিকানরা আব্রামস পাঠালে তারা লেপার্ড পাঠাবে তাহলে আমাদের আব্রামস পাঠানো দরকার।”

 

ব্রিটেন এরইমধ্যে বলেছে যে তারা ইউক্রেনে চ্যালেঞ্জার টু ট্যাঙ্ক পাঠাবে। পোল্যান্ড এই সপ্তাহে বলেছে যে, তারা লেপার্ড টু ট্যাঙ্ক ইউক্রেনে পাঠাতে চায়। এসব ট্যাংক যেহেতু জার্মানিতে তৈরি, তাই বার্লিনকে তাদের রপ্তানির অনুমোদন দিতে হবে।

 

ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের তথ্য অনুসারে, অন্তত ১৬টি ইউরোপীয় ও নেটোভুক্ত দেশের কাছে লেপার্ড টু ট্যাঙ্ক রয়েছে। এদের সবাই ইউক্রেনে ট্যাঙ্ক পাঠাবে না। কিন্তু জার্মান চ্যান্সেলরের আপাত সিদ্ধান্তের অর্থ হল তারা চাইলেই পাঠাতে পারে।

বিবিসির প্রতিরক্ষা বিষয়ক করেসপনডেন্ট জনাথন বিয়েল বলেন, ইউক্রেন মনে করে ৩০০ আধুনিক ট্যাংক পেলে তারা যুদ্ধে জিততে পারবে। কিন্তু তাদের প্রয়োজন মতো ট্যাংক পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।

 

কিন্তু যদি আধা ডজন পশ্চিমা দেশের প্রত্যেকে ১৪টি করে ট্যাংক  সরবরাহ করে, তাহলে এটি ট্যাংকের সংখ্যা প্রায় একশর কাছাকাছি নিয়ে যাবে, যা যুদ্ধে পার্থক্য তৈরি করতে পারে।

বিয়েল বলেন, যুক্তরাজ্যের চ্যালেঞ্জার টু, জার্মানির লেপার্ড টু এবং মার্কিন তৈরি আব্রামসসহ পশ্চিমা ট্যাংক গুলো সোভিয়েত যুগের একই ধরণের ট্যাংক যেমন টি-সেভেনটি টুয়ের চেয়ে উচ্চমানের। এই ট্যাংক গুলো ইউক্রেনীয় বাহিনীর সদস্যদের আরও বেশি সুরক্ষা, গতি এবং নির্ভুলতা দেবে।

কিন্তু পশ্চিমা আধুনিক প্রধান যুদ্ধ ট্যাংক গুলি নিজেরাই কোনো বিস্ময়কর অস্ত্র বা গেম-চেঞ্জার নয়। বরং সেগুলোর সাথে অন্য কী ধরণের অস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে সেটিও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিবিসির প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংবাদদাতা।

 

সাম্প্রতি পশ্চিমাদের সরবরাহ করা ভারী অস্ত্রে পরিবর্তন এসেছে। আরো শত শত সাঁজোয়া যান, আর্টিলারি সিস্টেম এবং গোলাবারুদ সরবরাহ করা হচ্ছে।

 

রাশিয়ানদেরকে প্রতিহত করে পিছু হটিয়ে দখলকৃত এলাকা পুনরুদ্ধারে মিলিতভাবে এ ধরণের অস্ত্রই দরকার।

যদি ইউক্রেনীয় সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় এবং সময়মতো অস্ত্র সরবরাহ করা হয়, তাহলে তারা আসছে বসন্তে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আক্রমণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

আক্রমণাত্মক অপারেশনের জন্য এখনো একটি বিষয় অনুপস্থিত। আর সেটি হচ্ছে আকাশপথে সামরিক শক্তি।

 

যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইউক্রেন পশ্চিমাদের কাছে আধুনিক যুদ্ধবিমান সরবরাহের দাবি জানিয়ে আসছে। এখন পর্যন্ত কোন কিছুই সরবরাহ করা হয়নি।

জার্মান সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়া হয়নি। বুধবার সকালে জার্মান পার্লামেন্টে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে চ্যান্সেলরের।

উদারপন্থী এফডিপি পার্টির মারি-অ্যাগনেস স্ট্র্যাক-সিমারম্যান, যিনি জার্মান পার্লামেন্টের প্রতিরক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান, তিনি এ ধরণের প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়েছেন।

তিনি বলেন,”সিদ্ধান্তটি নেয়া কঠিন ছিল, এটি নিতে অনেক বেশি সময়ও লেগেছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটি অনিবার্য ছিল।” তিনি আরো বলেন, এটি “পীড়িত এবং সাহসী ইউক্রেনীয় জনগণের” জন্য স্বস্তি নিয়ে আসবে।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সাঁজোয়া যান পাঠাতে জার্মানির অনীহার কথা ভেবে মিত্র দেশগুলো হতাশ হয়ে পড়েছিলো।

জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস এর আগে বলেছিলেন যে, বার্লিন অন্যান্য দেশগুলিকে ইউক্রেনীয়দের লেপার্ড টু ট্যাংক ব্যবহার করার প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছে, কিন্তু তাদের নিজস্ব ট্যাংক পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেয়নি।

জার্মানি ট্যাংক পাঠাতে রাজি হওয়ার প্রতিবেদন প্রকাশের পরে তিনি টেলিগ্রামে লিখেছেন, “ট্যাংক হল ইউক্রেনের ১৯৯১ সালের সীমানায় ফিরে আসার অন্যতম হাতিয়ার।”

সূত্র : বিবিসি

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৬:০০ | বুধবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৩

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com