নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট
আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই সরকারে থাকতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকার কোনোভাবেই ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। দেশ ও জনগণের অধিকার রক্ষা এবং জনগণকে বাঁচাতে যা কিছু করা দরকার সবকিছু করা হবে ইনশাআল্লাহ।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে পানির ট্যাংকির সামনে ১২ দলীয় জোটের বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমান সরকারের চারদিকে শুধু দুর্নীতি আর দুর্নীতি। এক সপ্তাহের মধ্যেই তারা ব্যাংক থেকে কত হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়ে গেছে। অসংখ্য টাকা তারা পাচার করেছে। আমি চাই ১০ দফা মেনে নিয়ে সরকার পদত্যাগ করুক। তা না হলে তাদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে। আমরা কেবল আন্দোলন শুরু করেছি। কঠোর আন্দোলন আসতেছে।
আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, আমরা তো এখনও আন্দোলন শুরু করিনি। তাতেই সরকারের লোকেরা বলে তারা নাকি ধাক্কা দিয়ে পড়বে না। আমি বলবো- কত বড় ধাক্কা লাগবে? তুফানের সাথে কিন্তু সুনামিও আসে। দরকার হলে আমরা সবাই মিলে সেটাও তৈরি করবো। আন্দোলনের সুনামির ধাক্কায় এই সরকার ভেসে চলে যাবে।
মিন্টু বলেন, আমরা অতীতে দেখেছি আওয়ামী লীগের ডাকে আগে ২০০ লোকও আসতো না। সামনে দুজনও আসবে না। আওয়ামী লীগ এখন দেশে দুঃস্বপ্নের নাম। কোনোভাবেই আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় রাখা যাবে না। তারা নিজেদের স্বার্থে দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে। দেশকে রক্ষা করা আমাদের সবার ঈমনী দায়িত্ব।
বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আজকে দেশের লোক বহু কষ্টে আছে। সরকার বলছে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েছে। আসলে বিশ্বে এখন তেলের দাম কমেছে ২৫ শতাংশ। দেশে এগুলোর দাম কমানোর কোনো লক্ষণ নেই। তারা বলে ২৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আছে। ২৪ হাজার নাকি উত্পাদন হচ্ছে। তাহলে এতো লোডশেডিং কেন? কারণ তাদের দুর্নীতি ও লুটপাট। তাদের বিদায় করতে না পারলে ভবিষ্যত প্রজন্মের ভবিষ্যত অন্ধকার।
জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদার পরিচালনায় বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, বাংলাদেশ লেবার পার্টি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, এনডিপির চেয়ারম্যান ক্বারী মোহাম্মদ আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাগপার সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম ও বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাসেমসহ জোটের শীর্ষ নেতারা।
নেতারা তাদের বক্তব্যে এই সরকারকে জনদুর্ভোগের সরকার আখ্যা দিয়ে বলেন, দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন বৃদ্ধি জনজীবনকে দুঃসহ অবস্থায় নিয়ে গেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা না করে আবারও নতুন করে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা দেশবাসীকে হতবাক করে দিয়েছে। বিদ্যুতে দাম বাড়লে এর প্রভাবে প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়বে যা সীমিত আয়ের মানুষকে তিলে তিলে মেরে ফেলার শামিল। সমাবেশে অবিলম্বে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা প্রত্যাহার করার দাবী জানানো হয়।
সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকার গঠনসহ ১০ দফা দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত ১২ দলীয় জোটের রাজপথে যুগপৎ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও জানান নেতারা।
সমাবেশ শেষে ১২ দলীয় জোটের একটি বিক্ষোভ মিছিল বিজয়নগর পানির ট্যাংকি-সংলগ্ন রাস্তায় শুরু হয় নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে পুনরায় পানির ট্যাংকির সামনে ফিরে এসে বিক্ষোভ সমাবেশ সমাপ্ত হয়।
Posted ০৭:৫৪ | মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain