জামায়াত নিষিদ্ধে সরকারের পরিকল্পনা নেই-স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের এ বক্তব্যে বিস্ময় ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সিপিবি, মহাজোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি সহ বেশ কিছু বাম দলগুলো।
জামায়াত ও গোলাম আযমকে নিয়ে সরকারের আচরণে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ এক বিবৃতিতে বলেন, “জামামাতকে নিষিদ্ধ করার দাবিটি এখন বিভিন্ন মহলের প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। এই অবস্থায় জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ গ্রহণের বদলে ‘জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই’ মর্মে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যে ঘোষণা দিয়েছেন, তা মুক্তিযুদ্ধের প্রতি ও জনমতের প্রতি চপেটাঘাত।”
নেতারা বলেন, “এই ঘোষণা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে সরকারের অবস্থানকে আবারো প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এই ঘোষণা কোন শক্তিকে সন্তুষ্ট করার জন্য এবং ভোটের কোন হিসাব বিবেচনায় নিয়ে করা হলো, তা দেশবাসী জানতে চায়।”
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, “রাজাকার শিরোমনি গোলাম আযমকে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে ৯০ বছর কারাদণ্ড দেয়ায় জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ট্রাইবুনালের এই রায়ের পর গোলাম আযমের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিতে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার জন্য প্রায় সব মহল থেকেই দাবি জানানো হয়েছে। আপিল করার সময়সীমা পার হতে চললেও এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আপিলের জন্য উদ্যোগ-তৎপরতার কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে মানুষের মধ্যে নানা ধরনের সন্দেহ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে।”
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য এবং রাজাকার শিরোমনি গোলাম আযমের সর্বোচ্চ দণ্ডের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আপিল করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন। এই দাবিতে জনগণকে সোচ্চার হওয়ার জন্য বিবৃতিতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
আর অন্য দিকে মহাজোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এ বিষয়ে বলেন, সংবিধান ও নির্বাচন বিধিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণে হাইকোর্ট জামায়াতে ইসলামকে দেয়া নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রায় সব পর্যায়ে ঘোষিত রায়ে জামায়াতে ইসলামকে যুদ্ধাপরাধী ও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে কর্মকাণ্ড করার কোন অধিকার তারা রাখে না।
রোববার দুপুরে তোপখানা রোডে ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যালয়ে পলিট ব্যুরোর সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের পরও তাদের সঙ্গে ঐক্য বহাল থাকবে বলে মওদুদের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, এর মধ্য দিয়ে তারা যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠনের সরাসরি পক্ষাবলম্বন করল।
রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পলিট ব্যুরোর সভায় উপস্থিত ছিলেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক, পলিট ব্যুরো সদস্য বিমল বিশ্বাস, নুরুল হাসান, ফজলে হোসেন বাদশা, শফিউদ্দিন আহমেদ, মাহমুদুল হাসান মানিক, নুর আহমদ বকুল ও কামরুল আহসান প্রমুখ।