| শনিবার, ০২ এপ্রিল ২০১১ | প্রিন্ট
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ চেয়ারম্যান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, আমি বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে মনে করি না। আর স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে জিয়াউর রহমানকে অস্বীকার করতে পারি না। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সামাজিক সংগঠন ‘মুক্তচিন্তা’ আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রাজনীতি ও সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি জাতির কাছে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংস্থাপন বিষয়ক উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমামের বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যারা হত্যা করে সরকার গঠন করেছিলেন, সেই মোশতাক সরকারের ক্যাবিনেট সচিব এইচ টি ইমাম এখন শেখ হাসিনার বোগলের নিচে আছেন। তিনি মোশতাক সরকারের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু খুনের বিচার হলেও যারা খুনের পর হালুয়া-রুটি ভোগ করলেন, তাদের বিচার হলো না। তাই আমি জাতিকে এইচ টি ইমামের বিচার করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সময় শেখ হাসিনা জার্মানিতে ছিলেন। এরপর তিনি প্রায় সাড়ে তিন বছর দিল্লিতে ছিলেন। ফলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড বিষয়ে এইচ টি ইমামের ভূমিকা নিয়ে তিনি কিছুই জানেন না। আমি এ বিষয়ে সবকিছু জানি।
স্বাধীনতার ঘোষক প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের বক্তব্য সম্পর্কে তিনি বলেন, হানিফ এখন সরকারি দলে ভালো অবস্থায় আছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৬-৭ বছর। আমি মনে করি বঙ্গবন্ধু মানে স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ এবং তিনি স্বাধীনতার জনক। এ তিনটি বিষয়ের পর আমি তাকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে মনে করি না। তাই আমি যতদিন বেঁচে আছি, ততদিন পিতাকে কখনও বউয়ের ছোট ভাই বানাতে দেব না।
আমি চট্টগ্রাম থেকে জিয়াউর রহমানের ঘোষণা শুনেছি এবং উত্সাহিত হয়েছি। আজ যারা এ বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করছেন তারাও শুনেছেন এবং উত্সাহিত হয়েছেন। এখন এ বিষয়টিকে তারা ভিন্নভাবে দেখছেন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা বঙ্গবন্ধুর নামে দিয়েছিলেন। তাই স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে আমি তাকে অস্বীকার করতে পারি না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খুন হওয়া মানুষের বাড়িতে গিয়ে বলেন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো আছে। ডাকাতি হওয়া বাড়িতে গিয়ে বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো আছে। তাহলে তাকে নির্বোধ ছাড়া আর কী বলা যায় ভেবে পাই না।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, যুদ্ধাপরাধের দায়ে আবদুল আলীমকে গ্রেফতারের পর তাকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে নিশ্চয়ই নয়-ছয় হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কোনো ইচ্ছা সরকারের নেই। আবদুল আলীমকে যদি জামিন দেয়া হয়, তাহলে বাংলাদেশের কোনো মানুষকে জেলে রাখার অধিকার এ সরকারের নেই।
আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গীতিকার শহীদুল্লাহ ফরায়েজী। তিনি বলেন, দেশ এখন সংবিধানশূন্য। শপথের সময় মন্ত্রীরা ব্যক্তিগত অনুরাগ-বিরাগের বশবর্তী হবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও তা মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সংবিধান জাতিকে সংগঠিত করতে পারেনি; বরং দেউলিয়া করেছে। তাই আমরা একটি নতুন সংবিধান চাই।
Posted ২২:৩৫ | শনিবার, ০২ এপ্রিল ২০১১
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin