ফরিদপুর সংবাদদাতা | শনিবার, ১২ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
স্বাধীনদেশ : আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের কথা বলে, কিন্তু ভোট করে রাতে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এবার আর চাইলেই সোনার হরিণ পাবেন না। এবার আমরা রুখে দাঁড়াব।শনিবার বেলা ১১টা থেকেই ফরিদপুর শহরের ৬ কিলোমিটার দূরে কোমরপুরে আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউশন মাঠে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে এমন কথা বলেন। বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশের ধারাবাহিকতায় ফরিদপুরে সমাবেশ করেছে দলটি। প্রথমে বিভিন্ন জেলার নেতারা সমাবেশে বক্তব্য দেন। বেলা পৌনে ২টার দিকে সমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত হন ফখরুল। পরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানান। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি। ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দাবি একটাই। শেখ হাসিনাকে সংসদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে এবং নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
‘দেশের মানুষকে সারা বিশ্বের কাছে লজ্জায় ফেলেছেন। তাদের লজ্জা নেই। এবার সময় এসেছে নতুন করে যুদ্ধ করার। আমাদের হাতে স্বাধীনতার পতাকা, আর ওদের হাতে শৃঙ্খলের জিঞ্জির।’ আওয়ামী লীগ দেশকে নিজের বাপ-দাদার দেশ মনে করেন অভিযোগ করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘তারা মনে করেন এদেশ তাদের। এদেশ তাদের বাপের দেশ। গুম-খুন করে রেহাই পাবেন না।’ আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের কথা বলতে বলতে দেশের গণতন্ত্র শেষ করে দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন ফখরুল। বলেন, ‘আজকে আপনারা গণতন্ত্রের কথা বলেন, অথচ গণতন্ত্র আপনারা শেষ করে দিয়েছেন।’ মির্জা ফখরুল এ সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের মহাসমাবেশে বলেছেন, তারা নাকি এখন গণতন্ত্রণকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার চেষ্টা করছেন।
‘যারা পথে পথে চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশ দিয়ে জিজ্ঞেস করেছে কোথায় যাবেন? সমাবেশে যাওয়া যাবে না। ভূতের মুখে রাম নাম। তাদের গণতন্ত্র মানে গুম, খুন, মামলা, হামলা করা, ভোট দেয়ার অধিকার কেড়ে নিয়ে, বিরোধী দলকে দমন করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন? এতো ভয় কেন আপনাদের?’ ফখরুল বলেন, ‘তাদের ভাবটা এমন, তোরা যে যা বলিস ভাই আমরা সোনার হরিণ চাই। কিন্তু এবার আর তা হবে না। মানুষ জেগে উঠেছে। এবার আর রাতের ভোট হবে না। আমরা রুখে দাঁড়াব। দেশনেত্রীকে মুক্ত করব। আমাদের এক দফা এক দাবি, ফয়সালা হবে রাজপথে। টেক ব্যাক বাংলাদেশ।’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে বলেন, ‘ক্যাসিনো সম্রাট ছাড়া পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে বসে থাকে, অথচ গণতন্ত্রের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় বন্দি রাখা হয়। তাদের কাছে এখন কোনো বিচারও আর নিরপেক্ষ নেই।’
মঞ্চে ফাঁকা ছিল দুটি চেয়ার
অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশের মতো ফরিদপুরের সমাবেশের মঞ্চেও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সম্মানে দুটি চেয়ার খালি রাখা হয়। ফরিদপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ এফ এম কাইয়ুম জঙ্গির সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সমাবেশের প্রধান সমন্বয়কারী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া, বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় গণসমাবেশের সমন্বয়কারী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, বিএনপির দুই সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাশুকুর রহমান ও মো. সেলিমুজ্জামানসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।
স্বাধীনদেশ/ও ক
Posted ১৫:৫৩ | শনিবার, ১২ নভেম্বর ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin