| বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা, ২০ নভেম্বর : নির্বাচনকালীন ‘ছোট’ মন্ত্রিসভা চূড়ান্ত করার আগে এতে বার বার পরিবর্তন আসছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র মঙ্গলবার গভীর রাতে জানায়, পুরনো মন্ত্রীদের মধ্য থেকে বাদ পড়ছেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, নুরুল ইসলাম নাহিদও। বাদ পড়তে যাচ্ছেন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামও।
এই কারণেই দিনভর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দিকে সবাই চেয়ে থাকলেও নতুন আট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর দপ্তর বণ্টন এবং পুরনো মন্ত্রীদের পদত্যাগের প্রজ্ঞাপন হয়নি।
দুপুর পর্যন্ত জানা যায়, পুরনো মন্ত্রীদের মধ্যে ৩০ জন বাদ পড়তে যাচ্ছেন। তবে সন্ধ্যায় বাদ পড়াদের তালিকার সংখ্যা বেড়ে ৩৮ জনে দাঁড়ায় বলে ওই সূত্র জানায়।
ওই সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মাত্র ১৩ জন পুরনো মন্ত্রীই থাকছেন নির্বাচনকালীন সরকারে, সোমবার শপথ নেয়া আটজনকে নিয়ে যার সদস্য সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ২১ জনে।
তখনকার হিসাবে পুরনো মন্ত্রীদের মধ্যে ছিলেন আবুল মাল আবদুল মুহিত, মতিয়া চৌধুরী, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, ওবায়দুল কাদের, জি এম কাদের, হাসানুল হক ইনু, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাছান মাহমুদ, এ এইচ মাহমুদ আলী ও প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।
৩০ সদস্যের মন্ত্রিসভার বাকি নয়টি পদ বিএনপির জন্য থাকছে?
এর উত্তরে বিকেলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি সূত্র দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদেরের মঙ্গলবার সকালে দেয়া একটি বক্তব্যের দিকে দৃষ্টিপাত করেন, যেখানে তিনি বলেছেন, বিএনপির জন্য এখনো ‘সর্বদলীয়’ মন্ত্রিসভার দ্বার খোলা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “জাতীয় পার্টিকে ৬ থেকে ৭টি (মন্ত্রী পদ) দেয়া হয়েছে, বিএনপিকে দিতে সমস্যা কী? প্রয়োজনে ১০ থেকে ১২টি দেব।”
সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করে সংলাপের বিষয়ে তার হস্তক্ষেপ চেয়ে খালেদা জিয়ার আহ্বানের পর মন্ত্রিসভা নিয়ে আবার পর্যালোচনা হয়।
“এতে এটাই বোঝা যায়, কেন আরো আট থেকে নয় জন পুরনো মন্ত্রী বাদ পড়তে যাচ্ছেন,” বলে ওই সূত্র।
এরপর গভীর রাতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সূত্র জানায়, আশরাফ, মহীউদ্দীন আলমগীর, নাহিদ ও কামরুল বাদ পড়তে যাচ্ছেন। তবে থাকছেন এ কে খন্দকার ও রমেশ চন্দ্র সেন।
এটি চূড়ান্ত হলে নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা দাঁড়াবে ১৯ জনে। ৩০ সদস্যের মন্ত্রিসভা ধরা হলে তাতে বিএনপির ১১ জনকে নেয়ার সুযোগ থাকছে।
মঙ্গলবার নতুন করে আট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী শপথ নেয়ার আগে সোমবার পর্যন্ত মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ছিল ৫০, যাদের মধ্যে ৩১ জন ছিলেন মন্ত্রী, আর ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী।
নতুন আট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠানের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ভূইঞা বলেছিলেন, মঙ্গলবারই দপ্তর বণ্টন এবং বাদপড়া মন্ত্রীদের বিষয়ে সব জানা যাবে।
“মঙ্গলবার সকালে নতুন মন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টন, পুরাতনদের মধ্য থেকে অনেকের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে আদেশ জারি ছাড়াও আরো একটি ঘটনা ঘটবে।”
মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. ইফতিখার হায়দার জানিয়েছিলেন, যে কোনো সময়ই আদেশ জারি করা হবে।
দুপুরের পরে এ বিষয়ে আবারো ইফতিখারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ইফতিখার বলেন, “রাত ৮টার পরে আদেশ জারি করা হতে পারে।”
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিনি বলেন, “আজ এসব আদেশ জারির সম্ভাবনা ক্ষীণ।”
আদেশ জারি করতে বিলম্ব হওয়ার বিশেষ কোনো কারণ আছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অন্য কোনো কারণ নেই। আজ আদেশ জারি না হলেও তাড়াতাড়িই হয়ে যাবে।”
এরপর রাতে আর প্রজ্ঞাপন হয়নি।
সচিবালয়ের একটি সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্যই ইতোমধ্যে জেনে গেছেন, তিনি ‘সর্বদলীয়’ সরকারে থাকছেন কি-না।
এদিকে খাদ্যমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ মঙ্গলবার তাদের মন্ত্রণালয়ের কর্মীদের বিদায়ও জানিয়েছেন।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বিদায় অনুষ্ঠানে আবদুর রাজ্জাককে চোখ মুছতে দেখা যায়।
আর এক বছর আগে মন্ত্রিপরিষদ সম্প্রসারণের সময় তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে শুধু ‘সংস্কৃতিমন্ত্রী’ বনে যাওয়া আবুল কালাম আজাদও নিজের মন্ত্রণালয়ে বিদায়ী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
নতুন মন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠানের আগে সোমবার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদায় জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফছারুল আমিন ও প্রতিমন্ত্রী মোতাহের হোসেনও।
Posted ০১:০৪ | বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০১৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin