কুমিল্লা : প্রবাসী কামাল হোসেনের পিঠে প্রহারের দগদগে চিহ্ন। এ চিহ্ন নিয়েই থানা হাজতে কাতরাচ্ছেন তিনি। ইউপি চেয়ারম্যান তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছেন। পরে মাদকের ঘটনা সাজিয়ে সোপর্দ করেছেন পুলিশে। এ নিয়ে তোলপাড় চলছে চৌদ্দগ্রাম জুড়ে।
উপজেলার কাশিনগর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হক শাহীন এ ঘটনা ঘটিয়েছেন সোমবার রাতে। কিন্তু কেন এ অমানবিক নির্যাতন? এ ব্যাপারে থানা হাজতে আটক কামাল হোসেন বলেন, আমার অপরাধ আমি দ্বিতীয় বিয়ে করেছি। আর আমার প্রথম স্ত্রীর আত্মীয় চেয়ারম্যান শহিদুল হক।
কামাল হোসেন (৩৫) সৌদি আরবে চাকরি করেন। গত ২৬শে জুলাই তিনি দেশে আসেন। কামাল একই ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া (দাতামা) গ্রামের মনতাজ প্রকাশ মন্তু মিয়ার ছেলে। দেশে এসে তার দ্বিতীয় স্ত্রী পান্নাকে নিয়ে ওই ইউনিয়নের পরানপুর গ্রামের শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন।
সোমবার সন্ধ্যায় চেয়ারম্যান তার বন্ধুর মাধ্যমে ফোন করে মিয়াবাজার এলাকায় নিয়ে যায় কামালকে। সেখান থেকে তাকে কাশিনগর ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে যায়। ইউপি কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে হাত-পা বেঁধে চেয়ারম্যান শহিদুল হক, মেম্বার রফিকুল ইসলাম ও শাহ আলম প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। পরে ওই রাতে তাকে ইয়াবা ট্যাবলেট ও বিভিন্ন প্রকার মাদক দিয়ে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
কামাল বলেন, আমি প্রবাসী। সৌদি আরব চাকরি করি। ২ সপ্তাহ হলো দেশে এসেছি। আমি মাদক সেবন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত নই। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।
কামালের দ্বিতীয় স্ত্রী পান্না বেগম বলেন, কামালের প্রথম স্ত্রী রহিমা বেগম উদ্দ্যেশমূলকভাবে চেয়ারম্যানকে দিয়ে মাদকের ঘটনা সাজিয়ে তাকে পুলিশে দিয়েছে।
কামালের পিতা মনতাজ মিয়া বলেন, কামাল মাদক সেবন বা বিক্রি কোনটার সঙ্গেই জড়িত নয়। সে রোজার মধ্যে বিদেশ থেকে দেশে এসেছে।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হক শাহিন বলেন, তার পরিষদের সদস্য মাদক ব্যবসায়ী খোরশেদের সহযোগী কামাল উদ্দিন মাদক সেবন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত।
সোমবার সন্ধ্যায় স্থানীয় লোকজন তাকে বিদেশী মদসহ আটক করে ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে আসে। এ সময় স্থানীয় জনগণ তাকে মারধর করলেও তিনি এর সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেন। তবে মারধর বেশি হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই রুহুল আমিন বলেন, কামালকে ১৪ বোতল বিদেশী মদসহ পুলিশে সোপর্দ করেছে ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
For News : news@shadindesh.com
Like this:
Like Loading...
Related