| বুধবার, ০৮ জানুয়ারি ২০১৪ | প্রিন্ট
কোর্ট রিপোর্টার : বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জু্র করা হয়েছে। তবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানের রিমান্ড ও জামিন উভয় আবেদন নাকচ করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল বুধবার শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আমিনুল হক এ আদেশ দেন। রমনা জোনের ডিসি মারুফ হোসেনের ২/১ নিউ সার্কুলার রোডের অফিসে গত ৪ ডিসেম্বর ১০/১২টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের করা হত্যা চেষ্টা ও ককটেল বিস্ফোরণের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদেরকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার উপ-পরিদর্শক ঠাকুর দাস মালো আসামিদের প্রত্যেকের ৭ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন।
এদিকে খন্দকার মাহবুব হোসেনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনেছে শাহবাগ থানা পুলিশ। বুধবার সন্ধ্যায় এ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। এতে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত ২৮ ডিসেম্বর সুপ্রিমকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দেয়া খন্দকার মাহবুবের বক্তব্যের সূত্র ধরে এ জিডি করা হয়েছে। খন্দকার মাহবুবকে ককটেল বিস্ফোরণ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে দু’দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
এর আগে সিএমএম আদালতে আবেদনে বলা হয়, নির্বাচন বানচাল করার উদ্দেশ্যে কর্তব্যরত আইন-শৃংখলা বাহিনীসহ জনমনে ভীতি সঞ্চারের জন্য গত ৪ ডিসেম্বর রমনা জোনের ডিসির ২/১ নিউ সার্কুলার রোডের অফিসে ১০/১২ জন অজ্ঞাতনামা বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা অতর্কিতে হামলা করে ১০/১২টি ককটেল বোমা বিস্ফোরণ ঘটনায়। অভিযুক্তরা বিভিন্ন সময়ে নির্বাচন বানচালের লক্ষ্যে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন।
শুরুতে রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পিপি আবদুল্লাহ আবু ও অতিরিক্ত পিপি শাহ আলম তালুকদার রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের পর আসামিদের রিমান্ড বাদিল করে জামিন চেয়ে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রফিকুল হক, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, খোরশেদ আলম, মহসীন মিয়া, ইকবাল হোসেন প্রমুখ।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক উল হক শুনানিতে বলেন, খন্দকার মাহবুব হোসেন দেশের ৪৮ হাজার আইনজীবীর অভিভাবক। মূলত: তাকেসহ অন্য অভিযুক্তদের এ মামলার ঘটনার জন্য গ্রেফতার করা হয়নি। প্রকৃত কারণ হলো দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সমালোচনা করে কথা বলা। আমিও এ নির্বাচন নিয়ে ক্রিটিসাইজ করে কথা বলেছি। আমি রাজনীতি করি না তাই আমাকে গ্রেফতার করেনি। তারা রাজনীতি করে তাই তাদের ধরেছে।
তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী সংসদ নির্বাচন সরাসরি হতে হবে। এখানেই আমাদের অবজেকশন। দেখা গেছে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফাঁকা মাঠে গোল দিয়েছেন। এ বক্তব্যের পর শুনানিতে উপস্থিত সরকার দলীয় আইনজীবীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। মহানগর পিপি আবু জানান, এ বক্তব্যে আমাদের আপত্তি আছে। উত্তরে ব্যারিস্টার রফিক উল হক বলেন, সারা বিশ্ববাসী বলেছে ফাঁকা মাঠে গোল হয়েছে, শুধু ভারত ছাড়া। আসলে ওইসব বিষয়ে সমালোচনার জন্যই রাজনৈতিক কারণে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেনকে গত মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয়। একইদিন বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বারিধারার একটি বাসা থেকে আটক করা হয় মিলনকে। এছাড়া গুলশানে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে আরো ১২ ঘণ্টা হরতালের ডাক দেয়ার পরপরই গ্রেফতার হন সেলিমা রহমান।
উল্লেখ্য, নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ১৮ জোটের আন্দোলনের মধ্যে বিএনপির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা বর্তমানে কারাবন্দি আছেন। এদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, এম কে আনোয়ার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ও আ স ম হান্নান শাহ, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, মেজার (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খন্দকার, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর মোহাম্মদ নসিরউদ্দিন, আবদুল আওয়াল মিন্টু, সাবেক সাংসদ সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল, বর্তমান সাংসদ শাম্মী আক্তার ও চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস রয়েছেন।
Posted ১০:৫৪ | বুধবার, ০৮ জানুয়ারি ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin