| মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট
স্টাফ রিপোর্টার : বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবিতে লাগাতার বিক্ষোভ সমাবেশে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাতির জন্য ক্যান্সার আখ্যা দিয়ে সাংবাদিক ইউনিয়নগুলোর নেতারা বলেছেন, যতদিন এই ক্যান্সারের ম–লোৎপাটন করা না যাবে, ততদিন জাতির কপালে শান্তি আসবে না। যেদিন সংবাদপত্রে শিরোনাম হবে ও শেখ হাসিনার বিদায়’ সেদিনই কেবল বন্ধ গণমাধ্যম চালু এবং দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গনে বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক ইউনিয়নগুলোর নেতারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে। বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়া, সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরেই লাগাতার এ কর্মসূচি পালন করে আসছেন সাংবাদিকরা। সাংবাদিকদের এ কর্মসূচিতে বিভিন্ন সময় রাজনীতিক, শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌলশীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষরা সংহতি প্রকাশ করেছেন।
বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের মহাসচিব ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, ডিইউজের সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, প্রকৌশলী নেতা রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক মুহাম্মদ, দপ্তর সম্পাদক এম এ নোমান, প্রচার সম্পাদক আকন আবদুল মান্নান, ডিইউজের দৈনিক সংগ্রাম ইউনিট প্রধান শহিদুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য কবি কামার ফরিদ, প্রত্যয় চৌধুরী, মাহমুদুর রহমান মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক রেজাউল কবির শিকদার রেজা প্রমুখ।
বন্ধ গণমাধ্যম চালুর দাবি জানিয়ে সভাপতির বক্তৃতায় রুহুল আমিন গাজী বলেন, যতদিন আমার দেশ, দিগন্ত ও ইসলামিক টিভি চালু, সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি, সাগর-রুনি হত্যার বিচার ও দেশে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের সব দলের অংশ গ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হবে ততদিন পর্যন্ত সাংবাদিকদের এ আন্দোলন চলবে। কিছু গণমাধ্যমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে আমরা কথা বললেও আমাদের সংবাদ প্রচার করা হয় না। অথচ শাহবাগের কথাকার কোন ইমরান প্রস্রাব করলেও তা লাইফ প্রচার করা হয়। তিনি বলেন, বন্ধ মিডিয়ার ব্যাপারে যারা কথা বলছেন না সময় আসলে তাদের মিডিয়াও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
সরকারের সমালোচনা করে সাংবাদিক এই নেতা বলেন, যারা ভাবছেন ৫ জানুয়ারির পর বাংলাদেশ তাদের হয়ে যাবে, তারা বোঝেননি এই নির্বাচন কারো কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, বিদেশীরা এ নির্বাচন এবং শেখ হাসিনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। জনগণ অতীতেও একতরফা নির্বাচন মেনে নেয়নি এবারও নিবে না। এর বিরুদ্ধে তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের টাকায় কেনা অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে আমাদের ওপরেই। এর চেয়ে ন্যাক্কারজনক আর কী হতে পারে?
শওকত মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনা জাতির জন্য ক্যান্সার। যতদিন এই ক্যান্সারের ম–লোৎপাটন করা না যাবে, ততদিন জাতির কপালে শান্তি আসবে না। এই ক্যান্সারের জীবণু ছড়ানোর দায়ে শেখ হাসিনাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। যেদিন সংবাদপত্রে শিরোনাম হবে ‘শেখ হাসিনার বিদায়’ সেদিনই কেবল বন্ধ গণমাধ্যম চালু এবং দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মুখে ভাত ও ভোটের অধিকারের কথা বললেও ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে জনগনের ভোটের অধিকার সম্প–র্ণ হরণ করেছেন। সাড়ে চার কোটি মানুষকে তাদের ভোটারাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
সাতক্ষিরায় সরকারে যৌথবাহিনীর নির্মমতার নিন্দা জানিয়ে কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, ইয়াহিয়ার নির্মমতাকেও হার মানিয়েছে রুক্ত পিপাসু শেখ হাসিনা। এক ব্যক্তির লালসার কারণে পুলিশ আজ দেশের মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে। এতো কিছুর পরেও কিছু গণমাধ্যম সরকারের স্তাবকতা করছে।
ইলিয়াস খান বলেন, ক্ষমতায় এসে গত পাঁচ বছরে সরকার গণতন্ত ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে হত্যা করেছে। অন্যদিকে জনগনের টাকা চুরি করে সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। কিন্তু জনগণের কাছে চুরির হিসাব রয়েছে। একদিন তা জনসমুক্ষে প্রকাশ করা হবে।
Posted ২১:৩৫ | মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin