| রবিবার, ২৩ মার্চ ২০১৪ | প্রিন্ট
২৩মার্চ : অষ্টম ওয়েজ বোর্ড সংক্রান্ত যে সমস্যাগুলো সাংবাদিকবৃন্দ চিহ্নিত করেছেন, সাংবাদিক- সংবাদপত্র মালিক-সরকার এই ত্রিপক্ষীয় আলোচনায় তা নিষ্পত্তির মাধ্যমে সরকার সাংবাদিকদের ন্যায্য দাবি পূরণে সর্বাত্মকভাবে সহায়তা করবে, জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদের নেতৃবৃন্দ, ডিইউজে’র সকল ইউনিটের প্রধান এবং সদস্যদের সাথে সাক্ষাতকালে মন্ত্রী একথা জানান।
ডিইউজের নবনির্বাচিত সভাপতি আলতাফ মাহমুদের নেতৃত্বে সাতাশ সদস্যের প্রতিনিধি দল এসময় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে গণমাধ্যমবান্ধব মন্ত্রী হিসেবে অভিহিত করে দেশের তথ্য প্রবাহ অংগনে নতুন গতি সঞ্চারের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
ডিইউজে নেতৃবৃন্দ তথ্যমন্ত্রীর কাছে অষ্টম ওয়েজ বোর্ড রোয়েদাদের কতিপয় অসঙ্গতি দূর করা, সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতি বন্ধ করা, সাংবাদিকদের আবাসনের ব্যবস্থার লক্ষ্যে ঢাকায় জমি বরাদ্দ দান, সংবাদপত্র মালিকদের কাছে সাংবাদিকদের পাওনা আদায়ে আইনজীবী প্যানেল নিয়োগ, ওয়েজবোর্ড মনিটরিং সেল পুনর্গঠন, প্রত্যেকটি সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে বাধ্যবাধকতা আরোপ, সরকারের কর্তৃত্বাধীন বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সংস্থার পরিচালনা পরিষদে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিনিধি নিয়োগ, বিদেশে অবস্থিত কূটনৈতিক মিশনে সাাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্যদের প্রেস মিনিস্টার অথবা প্রেস কাউন্সিলর পদে নিয়োগদান, তথ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্যদের ছেলে-মেয়েদের পোষ্য কোটায় নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে ১০ ভাগ কোটা সংরক্ষণের এবং সাংবাদিক-কমীচারীদের ডাটাবেজ তৈরির দশ দফা দাবী জানান এবং লিখিত দাবিনামা হস্তান্তর করেন।
জবাবে হাসানুল হক ইনু সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘ অমসৃণ পথ পেরিয়ে আপনারা আজ স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ অর্জন করেছেন। বিগত পাঁচ বছর শেখ হাসিনার সরকার গণমাধ্যমের পাশে দাঁড়িয়েছে, তাদের মাথায় নিরাপত্তার ছাতা ধরার চেষ্টা করেছে এবং তাতে করে গণমাধ্যম প্রসারিত হয়েছে।
তথ্যভিত্তিক উদাহরণ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার সরকার ছয়শ’রও বেশী নতুন পত্র-পত্রিকার ডিক্লারেশন দিয়েছে। নতুন নতুন কমিউনিটি রেডিও, এফএম রেডিও ও টেলিভিশন চ্যানেল লাইসেন্স পেয়েছে। এ সবই হয়েছে বেসরকারি খাতে-যার মাধ্যমে বাংলাদেশে গণমাধ্যম আজ স্বাধীনভাবে বিকশিত।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, অষ্টম ওয়েজ বোর্ডের যে সমস্যাগুলো আপনারা চিহ্নিত করেছেন সেগুলো অবাস্তবায়নযোগ্য নয়। ক্ষেত্রবিশেষে সংবাদপত্র মালিকদের নিয়ম মানার ক্ষেত্রে অনাগ্রহের কারণে যে সাংবাদিকবৃন্দ চাকুরিচ্যুত হয়েছে বলে আপনারা উল্লেখ করেছেন, সে বিষয়টিও সরকারের নজরদারির অন্তর্ভূক্ত। এ বিষয়ে যেহেতু তথ্য মন্ত্রণালয় তথা সরকারের দরজা খোলা আছে, সেহেতু তা আলোচনার টেবিলেই তার নিষ্পত্তি সম্ভব।
সরকার যেহেতু গণমাধ্যমের অবাধ তথ্য প্রবাহে কোনরূপ বিঘ্ন ঘটাতে চায় না, তাই সরকারের কাজ হলো গণমাধ্যম জগতকে সহায়তা দেয়া, বলেন মন্ত্রী।
হাসানুল হক ইনু বলেন, গণমাধ্যম, বিচারবিভাগ, সংসদ সবাই সরকারের সংগে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলেও পক্ষ জঙ্গিবাদী-সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং তাদের দোসররা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে না।
মন্ত্রী বলেন, অতীতে তিনটি অপকর্ম হয়েছে- মানুষ হত্যা, ইতিহাস হত্যা এবং গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ। এই অপকর্মের অতল গহ্বর থেকে শেখ হাসিনার সরকার দেশকে টেনে তুলে ধরেছে, বলেন তিনি।
অনেক চক্রান্তের মধ্যেও সত্য প্রকাশে দায়িত্ববান ভূমিকা পালনের জন্য গণমাধ্যমকে অভিনন্দন জানিয়ে সাংবাদিকদের প্রদত্ত দশ দফা দাবি প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা সাপেক্ষে দ্রুত নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করবেন, বলেন তথ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে ডিইউজের সভাপতি আলতাফ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদ, সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ শাহানা শিউলী, প্রচার সম্পাদক রফিক আহমেদ, ক্রীড়া ও সম্পাদক সলিমুল্লাহ সেলিম, জনকল্যাণ সম্পাদক মোঃ মেহেদী হাসান, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর ডিইউজে ইউনিট প্রধান ইনামুল হক বাবুল, ডেইলি নিউ নেশনের ডিইউজে ইউনিট প্রধান মোঃ সাহিদুল ইসলাম, দৈনিক করতোয়ার ডিইউজে ইউনিট প্রধান মাহমুদুর রহমান খোকন, দৈনিক বাংলাদেশ সময়ের ডিইউজে ইউনিট প্রধান আহমেদ মুকুল, দৈনিক আমার কাগজের ডিইউজে ইউনিট প্রধান কামাল চৌধুরী, দৈনিক ডেসটিনির ডিইউজে ইউনিট প্রধান মোস্তফা হোসেন চৌধুরী, দৈনিক গণজাগরণের ডিইউজে ইউনিট প্রধান জিল্লুর রহিম আজাদ, বাসস এর ডিইউজে উপ-ইউনিট প্রধান মোঃ শওকত আলী, চিত্রালী’র ডিইউজে উপ-ইউনিট প্রধান সঞ্জিত কুমার দাস, ডিউজে’র নির্বাহী সদস্য অমিয় ঘটক পুলক, সেবিকা রানী, শামীমা আক্তার দোলা, শাহনাজ বেগম, শাবান মাহমুদ, ডিউজে সদস্য শাহনেওয়াজ দুলাল, অনুপ কুমার খাস্তগীর, রতন চন্দ্র বালো উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন। ডিইউজে’র সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক পূর্ব কার্যকালের আলোকে তার বক্তব্য পেশ করেন।
Posted ১২:৩৬ | রবিবার, ২৩ মার্চ ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin