ঢাকা: রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রধান শহরগুলিতে বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ডের চেহারায় গত ক’দিনে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে।
গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর পাশে বিলবোর্ড জুড়ে চোখে পড়ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের গত সাড়ে চার বছরের নানা ধরনের উন্নয়নের খতিয়ান। প্রচারণার এই ধরণ নিয়ে শহরে চলছে নানান জল্পনা কল্পনা।
অন্যদিকে বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলো অভিযোগ করছে, কোনো অনুমতি ছাড়াই তাদের এসব বিলবোর্ড ব্যবহার করছে আওয়ামী লীগ। গত সাড়ে চার বছরে বিভিন্ন খাতে সরকারের উন্নয়নের প্রচারণায় ঢেকে দেয়া হয়েছে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে বেশিরভাগ বিলবোর্ডে।
ঢাকার শাহজাদপুর থেকে অফিস যাওয়ার পথে দুদিন আগে এধরনের বিলবোর্ড দেখে রীতিমতো বিস্মিত হয়েছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আলেয়া পারভীন।
তিনি বললেন, “প্রথমে বুঝতে পারিনি কী হচ্ছে। কেনই বা এগুলো লাগানো হয়েছে। পরে বুঝতে পারলাম এগুলো আওয়ামী লীগের সফলতার প্রচার। বিষয়টি আমার বেশ অস্বাভাবিক মনে হয়েছে।” আলেয়া পারভীনের মতোই অবাক এসব বিলবোর্ডের ব্যবহারকারীরাও।
ঢাকার রাস্তায় প্রচুর বিজ্ঞাপন দেয় এরকম একটি প্রতিষ্ঠান বেসরকারি মোবাইল ফোন কোম্পানি গ্রামীণফোনের কর্পোরেট কমিউনিকেশনস বিভাগের প্রধান তাহমিদ হক জানিয়েছেন, ঢাকার রাস্তায় তাদের ভাড়া করা বেশ কয়টি বিলবোর্ড কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করা হচ্ছে বলে তারা জানতে পেরেছেন।
তিনি বলেন, “সবমিলিয়ে আমাদের কত বিলবোর্ড এভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে সে নিয়ে অ্যাড এজেন্সির মাধ্যমে আমরা জানবার চেষ্টা করছি।”
“আমরা বিষয়টিতে কিছুটা অবাক হয়েছি তা বলতেই হবে। আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের জানানো হলে সেক্ষেত্রে আমরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত থাকতাম,” বললেন তাহমিদ হক।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন দক্ষিণের মতে তাদের অঞ্চলে মোট বৈধ বিলবোর্ডের সংখ্যা ৮০৫টি। ঢাকা উত্তরেও এর সংখ্যা হাজারের কাছাকাছি। এর বাইরেও রয়েছে বহু অবৈধ বিলবোর্ড।
সিটি কর্পোরেশন থেকে বিলবোর্ড লিজ নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিজ্ঞাপনের জন্য ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করে ঢাকার কিছু বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠান। তাদের বেশ ক’জনের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে কয়েকজন কথা বলতে রাজি হননি। আর কয়েকজন কথা বলতে ভয় প্রকাশ করেছেন।
এদিকে ঈদের মৌসুমে অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের সামগ্রীর বিজ্ঞাপন বেশ ঘটা করে প্রচার করছিল। এরকম পরিস্থিতিতে বিলবোর্ডগুলো কোনো অনুমতি ছাড়া কেউ ব্যবহার করছে কিনা তা জানতে চাইলে, ঢাকা সিটি প্রশাসনিক কর্মকর্তা নজমুল ইসলাম বলেন, “সিটি কর্পোরেশন বিলবোর্ড নানান অ্যাড এজেন্সিকে লিজ দেয়। আমরা নিয়মিত তাদের কাছ থেকে ভাড়া পাচ্ছি। তারপর কী হচ্ছে সেটি আমাদের দেখার দরকার নেই।
“অন্যদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন “এই ধরনের অভিযোগ যৌক্তিক নয়। আমার বিশ্বাস এখানে অবশ্যই অনুমতি চাওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এখানে বিলবোর্ডে যা লেখা হয়েছে তা আওয়ামী লীগের সফলতার কথা। আমরা চ্যালেঞ্জ করছি যদি কেউ এখানে কোনো মিথ্যা তথ্য দেখাতে পারে।”
তবে আলেয়া পারভীনের মতো আরও অনেক ঢাকাবাসী জানিয়েছেন এধরনের রাজনৈতিক প্রচারণা তারা আগে কখনো দেখেননি।
Fo
r News : news@shadindesh.com
Like this:
Like Loading...
Related