| শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল আহমদ রক্ষিবাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন। ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহতের সময় রক্ষীবাহিনীর অপ্রত্যাশিত ‘নীরবতা পালন’ এবং তোফায়েল আহমদের ভূমিকা নেপথ্য কারণ এখনো খুঁজে বেড়াচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর সুহৃদ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
কয়েকদিন আগে ডা. এস এ মালেক তোফায়েল আহমদসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের ১৫ আগস্টের পর পালানোর কাহিনী তুলে ধরেছেন এক অনুষ্ঠানে। এস এ মালেক ( ১৯৯৬-২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা) তোফায়েল আহমদসহ কয়েকজনকে ইংগিত করে বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে খুনের পর এদের কেউ শ্বশুরবাড়ি পালিয়েছিলেন কেউবা আত্মগোপন করেছিলেন। কেউ বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন নি। আজ শেখ হাসিনাকে তোয়াজ করতে এখন বঙ্গবন্ধুর জন্য প্রাণ দিতে চাচ্ছেন।
’৯১ সালে তোফায়েল আহমদের ভূমিকাও সর্বজনবিদিত। পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সারাবিশ্ব নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে বলে অভিমত দেয়। পরাজয় মেনে না নিয়ে শেখ হাসিনা সূক্ষ্ম কারচুপির অভিযোগ তোলেন।
ড. কামাল হোসেন ও তোফায়েল আহমদও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে ঘোষণা দিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্যের সমালোচনা করেন। পরাজয়ের অভিমানে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করলে ছাত্রলীগ তাকে সভাপতির পদে ফিরিয়ে আসার দাবিতে ধানম-ির ৩২ নম্বরের সামনে রাস্তায় শুইয়ে পড়েন। অতপর শেখ হাসিনা সভাপতির পদে ফিরে এসে ড. কামাল হোসেন ও তোফায়েল আহমদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন।
আওয়ামী লীগের এই দুই নেতা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন তারা নিজেদের অবস্থানে অটল থাকবেন। দুদিন পর শেখ হাসিনাকে খুশি করতে নিজের অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে গিয়ে তোফায়েল আহমদ বলেন নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। ড. কামাল হোসেনকে বিপদে ফেলে তোফায়েল শেখ হাসিনার আশীর্বাদ গ্রহণ করেন।
১/১১ পর শেখ হাসিনা যখন কারাগারে তখন সংস্কারবাদী হিসেবে তার ভূমিকা সবারই জানা। র্যাটস এর একজন হিসেবে শেখ হাসিনাকে মাইন্যাস করার তার চেষ্টা দলীয় নেতাকর্মীদের বিক্ষুব্ধ করে তোলে। গত বছরও কচিকাঁচার মন্ত্রিসভা নিয়ে সরকার বিপাকে পড়ে। শেখ হাসিনা প্রশাসনকে গতিশীল করতে সিনিয়র কিছু নেতাকে মন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি তোফায়েল আহমদকে মন্ত্রী করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু বিপদ দেখে তোফায়েল আহমদ মন্ত্রীত্ব গ্রহণ না করে নিজের ‘ইমেজ’ বৃদ্ধির চেষ্টা করেন এবং শেখ হাসিনাকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগের তা-বে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠায় এক সময়ের আওয়ামী লীগের এমপি প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মুসা সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন।
এক টকশোতে জনাব মুসা দেশবাসীকে একটি গল্প শোনান। মুসা বলেন, আমি সরকারের এসব জুলুম-নির্যাতন এবং ছাত্রলীগ যুবলীগের তা-ব বন্ধে প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দেয়ার জন্য তোফায়েল আহমদকে অনুরোধ করি। বলি ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী লীগে কাছে দেশের মানুষ এসব আশা করেনি।
তোফায়েল আহমদ আমার অভিযোগ স্বীকার করেন এবং বলেন এটা খুবই অন্যায়। তবে মুসা ভাই আমি এসব প্রধানমন্ত্রীকে বলতে পারবো না এবং এসব নিয়ে মিডিয়ায় সমালোচনাও করতে পারবো না। কারণ আমি আওয়ামী লীগার হিসেবে মরতে চাই। প্রশ্ন হলো মুসলমানের সন্তান তোফায়েল আহমদ নবী (সা.) প্রেমী নয়, এমনকি মুসলমান হিসেবেও নয়; তার প্রত্যাশা ‘আওয়ামী লীগার’ হিসেবে মুত্যৃবরণ করা। যে মানুষ আওয়ামী লীগার হিসেবে মরতে চান তিনি নির্বাচনকালীণ সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রী হিসেবে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবেন প্রত্যাশা করা কি যায়?
Posted ০২:০২ | শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০১৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin