রাজধানীর ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম মজুমদারকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তার শাশুড়ি লিপি আক্তার। এ জন্য তিনি দু’লাখ টাকার বিনিময়ে পেশাদার খুনিদের সঙ্গে চুক্তি করেন। জামাতার ‘অনৈতিক সম্পর্ক’ সহ্য করতে না পেরে তিনি এ ঘটনা ঘটান।
গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় র্যাব। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে লিপি আক্তারসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য তিনজন হলেন_ মোহাম্মদ আলী মহব্বত, ফজলুর রহমান ও মিজানুর রহমান মন্টু।
গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ঝিনাইদহের শৈলকূপা থেকে অপহৃত হন ঢাকার ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম মজুমদার। ওই রাতেই কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় তার হাতকড়া পরা লাশ পাওয়া যায়।
র্যাব সদর দফতরে গতকাল বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এটিএম হাবিবুর রহমান জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে গতকাল ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকা ও গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে লিপি আক্তার জামাতাকে খুন করানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন। লিপি বলেছেন, জামাতা রফিকুল অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোর করে তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন।
হাবিবুর রহমান আরও বলেন, রফিক হত্যাকাণ্ড উদ্ঘাটন করতে গিয়ে বিএনপি নেতা চৌধুরী আলমের রহস্যজনক নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার ক্লু পাওয়া গেছে। লিপি র্যাবকে বলেন, চৌধুরী আলমকে হত্যা করেন রফিক। তবে তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলা যাবে না।
র্যাব জানায়, গ্রেফতার চারজনের মধ্যে ফজলুর রহমান অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য। তিনি র্যাবেও কাজ করেছেন। এ কারণে রফিকুল অপহৃত হলে গুজব ছড়ানো হয়, র্যাবই তাকে তুলে নিয়ে গেছে।
লিপির কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে র্যাব কর্মকর্তারা বলেন, পাঁচ বছর আগে প্রথম স্ত্রী রিনা খাতুনের সঙ্গে রফিকের ছাড়াছাড়ি হয়। এরপর লিপি আক্তারের ছোট মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা ঝরাকে বিয়ে করেন রফিক। কিছুদিন যেতেই তিনি শাশুড়ি লিপির দিকে নজর দেন। অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। শাশুড়ি এতে বাধা দিলে রফিকুল তার মেয়েকে (ঝরা) মেরে ফেলার হুমকি দেন। একপর্যায়ে লিপির বড় মেয়ের সঙ্গেও একইভাবে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন রফিক। জামাতার অনাচার সহ্য করতে না পেরে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন লিপি।
র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লে. কর্নেল জিয়াউল আহসান বলেন, র্যাব সদস্যরা ছদ্মবেশ ধারণ করে রফিকের শ্বশুরবাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকূপা এবং কুষ্টিয়ার কুমারখালী এলাকায় তথ্য সংগ্রহ করতে থাকেন। বিশেষ করে লিপি আক্তারের গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। পর্যবেক্ষণের বিভিন্ন ধাপে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রফিকের শাশুড়ির কিছুটা সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। একপর্যায়ে প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে র্যাব নিশ্চিত হয়, শাশুড়ির পরিকল্পনাতেই খুন হন রফিক।
For News : news@shadindesh.com
Like this:
Like Loading...
Related