| বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট
বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সাবেক রাষ্ট্রদূত মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনকে আটক করেছে পুলিশ। গত রাত সাড়ে ৯টায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। গত রাত ৯টার দিকে মীর নাছির ঢাকায় যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে উপস্থিত হন। এ সময় পুলিশ তাকে আটক করে। পুলিশ জানায়, মীর নাছিরকে আটকের পর কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসা হয়। আজ শুক্রবার তাকে আদালতে হাজির করা হবে। এ ছাড়া গতকাল অবরোধ চলাকালে পুলিশ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক রাষ্ট্্রদূত গোলাম আকবর খোন্দকারসহ ছয় নেতাকে আটক করেছে। এ ছাড়া একটি মামলার আসামি হিসেবে বিএনপির ১৬ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। প্রথম মামলা দায়ের করা হয় নগরীর চকবাজার থানায়। চট্টেশ্বরী মোড়ে গাড়ি ভাঙচুর, সিএনজি অটোরিকশায় অগ্নিসংযোগ ও এক যাত্রী অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনায় বিএনপির নগর সভাপতিসহ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। বুধবার বিকেলে চকবাজার থানার উপপরিদর্শক শিবেন বিশ্বাস বাদি হয়ে এই মামলা করেন। এতে বিএনপির নগর সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খোন্দকার, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর মো: নাছির উদ্দিন, নগর জামায়াতের আমির ও সংসদ সদস্য মাওলানা শামসুল ইসলাম, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা: শাহাদাত হোসেনসহ ৬৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা অনেককে আসামি করে এ মামলা করা হয়। এ ছাড়া ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের বাসায় তল্লাশির নামে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কাজীর দেউরী মোড়ে যাত্রীবাহী অটোরিকশায় আগুন দেয়ার ঘটনায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গোলাম আকবর খোন্দকার মীর মো: নাছির উদ্দিন, মাওলানা শামসুল ইসলাম, ডা: শাহাদাতসহ ৭৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছে। বুধবার এ কে খান মোড়ে পুলিশের সাথে ১৮ দলের সংঘর্ষের ঘটনায় পাহাড়তলী থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এতেও ১৮ দলের ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। একই দিন কর্নেলহাটে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় আকবর শাহ থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। এতে ১৮ দলের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে। বন্দর থানা এলাকায় ট্্রাক ও কাভার্ডভ্যান ভাঙচুরের অভিযোগে থানার এসআই কাউছার উদ্দিন চৌধুরী বাদি হয়ে একটি মামলা করেছেন। এতে সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কমিশনার হাসান মুরাদ, থানা বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান ও সরফরাজ উদ্দিনসহ অনেককে আসামি করা হয়েছে। গতকাল সকালে নগরীর নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে পুলিশ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খোন্দকার ও তার ব্যক্তিগত সহকারী অর্জুন কুমার নাথ, উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, মহানগর যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, যুবদলের কেন্দ্রীয় সদস্য মোহাম্মদ শাহিন, চবি ছাত্রদল নেতা খোরশেদ আলমকে গ্রেফতার করে। এর আগে বুধবার রাতে নগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর মেহেদী বাগের বাসায় পুলিশ তল্লাশি চালায়। রাত ১০টা ৩৫ থেকে ৫৫ মিনিট পর্যন্ত সেখানে তল্লাশি চালিয়ে আমীর খসরুকে না পেয়ে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা: শাহাদাত হোসেনের বাদশা মিয়া সড়কের বাসায় তল্লাশি চালায়। সেখানেও শাহাদাতকে না পেয়ে রাত ১০টা ২০ মিনিটে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পাঁচলাইশের ট্্িরটমেন্ট হাসপাতালে তল্লাশি চালানো হয়। লেবার পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আলাউদ্দিন আলী নয়া দিগন্তকে জানান, বায়েজিদ থানা পুলিশ তার বাসায় প্রতিদিন হানা দিচ্ছে। তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে তার স্টাফদের হয়রানি করছে। এ ছাড়া দুই দিন ধরে পুলিশ ১৮ দলের সমর্থকদের বাসা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং আত্মীয়স্বজনের বাসা পর্যন্ত তল্লাশির নামে হয়রানি করছে। গোলাম আকবরসহ ২২ নেতাকর্মী জেলহাজতে :
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খোন্দকারসহ দলের ২২ নেতাকর্মীকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল বিকেলে মহানগর হাকিম বেগম নওরীন আক্তার কাকনের আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই সাথে ১৫ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়। এ ব্যাপারে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) রেজাউল মাসুদ নয়া দিগন্তকে জানান, ‘কোতোয়ালি থানায় দায়েরকৃত কাজীর দেউরীতে গাড়িতে আগুন ও ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলায় করা একটি মামলায় গোলাম আকবর খোন্দকারসহ বিএনপির ২২ নেতাকর্মীকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত উভয় পরে শুনানি শেষে তাদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। এ দিকে গোলাম আকবর খোন্দকারকে গ্রেফতারের নিন্দা ও তার মুক্তি দাবি করেছেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দল চট্টগ্রাম নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক, উত্তর জেলা জাসাসের সভাপতি এম হাসান মুকুল, সাধারণ সাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী যুবদল হাটহাজারী উপজেলা সভাপতি মোহাম্মদ জাকের হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাহেদুল আজম সাহেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী, জাসাস হাটহাজারী উপজেলা সভাপতি খোরশেদ আলম, সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ হোসেন, সাধারণ মোহাম্মদ শাহাবুউদ্দিন, সন্দীপ থানা জাসাস সভাপতি রিপন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর টুটুলসহ অন্য নেতারা। হাটহাজারীতে বিক্ষোভ হাটহাজারী সংবাদদাতা জানান, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের গ্রেফতারের প্রতিবাদে তার নিজ এলাকা চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে গত রাত সাড়ে ৯টা থেকে স্থানীয় পৌর এলাকা ও মির্জাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ুব্ধ নেতাকর্মীরা রাস্তায় বেড়িয়ে পড়েন। তারা অর্ধশত গাড়ি ভাঙচুর এবং মির্জাপুরের নয়াহাট ও বুড়িপুকুর এলাকায় দু’টি সিএনজি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। যানবাহনে অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর লোকজন আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে বিুব্ধ জনতা দমকলের গাড়িটি ভাঙচুর করে।
Posted ১৯:৫৯ | বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০১৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin