| সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০১৪ | প্রিন্ট
সরকারকে অবিলম্বে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা চালু ও সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়ে মানববন্ধনে বক্তারা বলেছেন, নিজেদের শাসনকাল প্রলম্বিত করতেই সরকার আমার দেশসহ কয়েকটি গণমাধ্যম বন্ধ ও সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে কারারুদ্ধ করেছে। সময় থাকতে সরকার তাকে মুক্তি না দিলে বিস্ফোরনের মুখে মানুষের গণআন্দোলনই সরকারের পতনকে ত্বরান্বিত করবে।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা চালু ও সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা এসব কথা বলেন। ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এ্যাব) এ মানববন্ধন কর্মসূচীর আয়োজন করে। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা ‘আমার দেশ এর ছাপাখানা বন্ধ কেন, সরকার জবাব চাই, মাহমুদুর রহমান জেলে কেন, প্রশাসন জবাব চাই’সহ বিভিন্ন লেখা স¤¦লিত ব্যানার-প্ল্যাকার্ড বহন করে।
এ্যাবের আহ্বায়ক প্রকৌশলী আ ন হ আখতার হোসেন-এর সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ড্যাবের মহাসচিব ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইইবি) সহ-সভাপতি প্রকৌশলী হারুন-অর রশিদ, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের অতিরিক্ত মহাসচিব জাকির হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ এ্যাবের সাবেক সহ-সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, সত্য সংবাদ প্রকাশের কারণেই সরকার আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করেছে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি সত্য কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। মানুষের বাক স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে হবে। মাহমুদুর রহমানকে মুক্তি দিতে হবে। তা না হলে সাধারণ মানুষ একদিন এর বিরুদ্ধে জেগে উঠবেই।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেন, মাহমুদুর রহমানের কোনো দোষ নেই। তার দোষ একটাই তিনি স্বাধীনতার চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিতে চেয়েছে। সত্য কথা জাতির সামনে তুলে ধরেছে। এজন্যই সরকার তাকে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। কারাগারে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাহমুদুর রহমান কোনো অপরাধ করে থাকলে আদালত তার বিচার করুক। কিন্তু কোনো রকম বিচার ছাড়াই তাকে অন্যায়ভাবে জেলে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, মাহমুদুর নিজের সব কিছু বিক্রি করে জাতির সামনে সত্য প্রকাশের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিল। কিন্তু সরকার তাকে এবং তার প্রতিষ্ঠানকে তিলে তিলে ধংস করে দিচ্ছে। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, সময় থাকতে মাহমুদুর রহমানকে মুক্তি দিন। তা না হলে বিস্ফোরš§ুখ মানুষের গণআন্দোলনই সরকারের পতনকে ত্বরানি¦ত করবে।
রুহুল আমিন গাজী বলেন, আওয়ামী লীগ আর সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কখনো একসাথে চলে না। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও গণমাধ্যম স্বাধীনতায় বিশ¡াস করে না। তিনি বলেন, সরকার আইন লঙ্ঘন করে আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করেছে। তারা যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই গণমাধ্যমের ওপর হামলা চালিয়েছে। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে দূর্বার আন্দোলরে বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাহমুদুর রহমানের মুক্তি ও বন্ধ গণমাধ্যম চালু না হওয়া পর্যন্ত সাংবাদিকদের আন্দোলন চলবে। তিনি একই দাবিতে আগামীকাল বুধবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ ও সমাবেশের ঘোষণা দেন।
ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, নিজেদের শাসনকাল প্রল¤ি¦ত করতেই সরকার আমার দেশ বন্ধ ও পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে জেলে রেখেছে। আমার দেশ এর অপরাধ তারা সত্য কথা লিখতো। কিন্তু এভাবে সত্য চেপে রেখে কেউ বেশিদিন টিকে থাকতে পারেনি। এ সরকারও পারবে না।
সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, আমার দেশ বন্ধের এক বছর পূর্তি হতে যাচ্ছে। দীর্ঘ এই সময়ে অগণতিক পাঠক এই জনপ্রিয় পত্রিকাটি পড়তে পারছে না। মজলুম সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে কোনো বিচার ছাড়াই কারারুদ্ধ করে রেখেছে। তিনি অবিলম্বে মাহমুদুর রহমানের মুক্তির দাবি জানিয়ে সহস্রাধিক সাংবাদিক-কর্মচারির পরিবারের কথা চিন্তা করে সরকারকে আমার দেশ-এর ছাপাখানা খুলে দেয়ার আহ্বান জানান।
প্রকৌশলী হারুন-অর রশিদ বলেন, মাহমুদুর রহমান ও আমার দেশ-এর ক্ষেত্রে মানবাধিকার চরমভাবে ভুলুণ্ঠিত করেছে সরকার। কেউ কোনো অপরাধ করেও থাকলে তার বিচার না করে এভাবে কারারুদ্ধ করে রাখা আইনের চরম লঙ্ঘন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
কাল প্রেস ক্লাবে বিএফইউজে-ডিইউজে’র বিক্ষোভ-সমাবেশ : দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা চালু ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তির দাবিতে আগামীকাল বুধবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশ কর্মসূচী পালন করবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। এতে বিভিন্ন রাজনীতিক, সাংবাদিক, বিশ¡বিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেবেন।
Posted ১১:৫৮ | সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin