মাধবপুর, হবিগন্জ :মাধবপুর ধান বাজারের প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের পুরো জায়গাটি রাতের আঁধারে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দখল করলেও সকালে প্রশাসনের উপস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও জনতা তা ভেঙ্গে ফেলে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে ২টার মধ্যে দখল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় এবং সকাল ১১টার দিকে তা ভেঙ্গে ফেলা হয়। দখলদারদের দাবি মাধবপুর ধান বাজারের কাটিয়ারা মৌজার ৮৩৭ দাগে ৮ শতক জায়গা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম টিটুসহ ১৮ জন জেলা প্রশাসক থেকে একসনা লীজ এনে ঘর নির্মাণ করেন। শত বছর আগে প্রতিষ্ঠিত মাধবপুর বাজারটি হবিগঞ্জ জেলার মধ্যে একটি বৃহৎ বাজার। এখানে মাধবপুরসহ পার্শ্ববর্তী নাসিরনগর, বিজয়নগর, লাখাই উপজেলার হাজার হাজার জনসাধারণ প্রতিদিন সদাই করতে আসেন।
বাজার প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই কাটিয়ারা মৌজার ৮৩৭ দাগের জায়গাটি কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য ধান বাজার (তোহা বাজার) নাম নির্ধারণ করে বাজার কর্তৃপক্ষ। পৌর পরিষদ ওই তোহা বাজার প্রতি বছর ইজারা দিয়ে আসছে। ওই সময় থেকেই প্রতি শনি ও মঙ্গলবার কৃষকরা টোল আদায়ের মাধ্যমে তাদের উৎপাদিত ধান ক্রয়-বিক্রয় করে আসছে। হঠাৎ করে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম টিটুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের ৩০/৪০ নেতাকর্মী পুরো ধান বাজার দখল করে ঘর নির্মাণ করে। গতকাল বুধবার সকালে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জনতা তা দেখে হতবাক বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কর্মকর্তা (ভূমি) শফিউল্লাহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীদের ৩ ঘন্টার মধ্যে এই স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়ার আশ্বাস দিলেও ক্ষুব্ধ জনতা বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে জনতা এই স্থাপনা ভাঙ্গা শুরু করে। এ সময় দখলদারদের সঙ্গে স্থানীয় জনতার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ শফিউল¬াহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে খবর দিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন জাহান ঘটনাস্থলে আসেন। খবর পেয়ে মাধবপুর থানার এসআই কৃষ্ণ মোহন দেবনাথ একদল পুলিশ নিয়ে গিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
পৌর মেয়র হিরেন্দ্র লাল সাহার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কে বা কারা এটা করেছে আমার জানা নেই। আমি খবর পেয়ে প্রশাসনের সকল বিভাগকে অবহিত করি। প্রশাসন অবৈধ এই স্থাপনাটি ভেঙ্গে দেয়ার জন্য আমার সাহায্য চাইলে আমি তাদের কিছু শ্রমিক দিয়ে সাহায্য করি। এই জায়গা কেউ লিজ এনেছে বলে আমার জানা নেই। তাছাড়া আমার কাছ থেকে কোন সুপারিশও কেউ নেয়নি। এই জায়গায় পৌর মার্কেট করার জন্য আমরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি দরখাস্ত করেছি। কাউন্সিলর গোলাপ খান বলেন, শত বছরের ধান বাজারটি এভাবে দখল করা উচিত হয়নি।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ শফিউল্লাহ জানান, এ বিষয়ে আমি এখন কিছু বলতে পারব না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন জাহানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, একসনা লিজ নিয়ে তারা ঘর নির্মাণ করেছে। আইন-শৃঙ্খলার স্বার্থে লিজ গ্রহীতাদের অনুরোধ করলে তারা স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছে। উন্মুক্ত তোহা বাজার লিজ দেয়ার বিধান আছে কি-না প্রশ্ন করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
For News : news@shadindesh.com
Like this:
Like Loading...
Related