| মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট
কোর্ট প্রতিবেদক : ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহকে আবারও হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আদালত অবমাননার অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে তার ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৮ জানুয়ারি দিন ঠিক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। আদালতের শুনানিতে তার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, তারিকুল ইসলাম; অন্যদিকে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন সুলতান মাহমুদ সিমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন। তার আইনজীবী দুই সপ্তাহের সময় চেয়ে মাহফুজ উল্লাহকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকেও অব্যাহতির আবেদন জানান। সময় আবেদন গ্রহণ করে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতির আবেদন খারিজ করেন ট্রাইব্যুনাল। এই সময় আগামী ২৮ জানুয়ারি পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করে ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান এটিএম ফজলে কবীর বলেন, সে পর্যন্ত আমরা উনাকে পর্যবেক্ষণে রাখলাম। এ বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত দেয়া হবে।
মঙ্গলবার সকাল ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ বেলা দুইটার কিছুক্ষণ আগে তার আইনজীবীর সঙ্গে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হন। ট্রাইব্যুনালের বিচার নিয়ে মন্তব্য করায় আদালত অবমাননার বিষয়ে আজ নির্ধারিত দিনে হাজির না হওয়ায় সকালে তাকে বেলা দুইটার মধ্যে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ওই সময় আদালত বলেন, অন্যথায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করা হবে। সকালে আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর পক্ষের আইনজীবী তারিকুল ইসলাম সময় আবেদন করেন। এ সময় আদালত তাকে উপস্থিত না দেখে দ্রুত ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে আইনজীবীকে নির্দেশ দেন।
আদালত বলেন, আপনার ক্লায়েন্টকে দুপুরের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে আসতে বলেন নইলে আমরা গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করবো। এ সময় ট্রাইব্যুনালে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত ১ ডিসেম্বর সাংবাদিক মাহফুজুল্লাহকে দাড়ঁ করিয়ে রাখে ট্রাইব্যুনাল। গত ২৬ সেপ্টেম্বর গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহকে তলব করেন ট্রাইব্যুনাল। এরপর গত ৬ নভেম্বর চ্যানেল২৪ এর বিরুদ্ধে আনীত আদালত অবমাননার জবাব দাখিল করেন তাদের আইনজীবী আসাদুজ্জামান।
এ ছাড়া গত ১০ অক্টোবর ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ট্রাইব্যুনালে তার লিখিত জবাব দাখিল করেন এবং তিনি নিজে শুনানি করতে আবেদন করেন। গত ২৪সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কার্যালয় বরাবর প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বেসরকারী চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর কর্তৃপক্ষসহ ৮জনকে বিবাদী করে অভিযোগ দাখিল করে। প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, তুরিন আফরোজ, সুলতান মাহমুদ সীমন, তাপস কান্তি বল, সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি ও রেজিয়া সুলতানা চমন এ আবেদন দাখিল করেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ এর ১১(৪)ধারা মোতাবেক কেন তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না তা, জানতে চেয়ে রুল জারির আবেদন করা হয়। একই সঙ্গে তাদের অভিযুক্ত করে এক বছরের কারাদণ্ড অথবা জরিমানা করার আবেদন করা হয়।
আবেদনে বাকী বিবাদীরা হলেন, চ্যানেল ২৪ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী পরিচালক, হেড অব প্রোগ্রাম, মুক্তবাক নামন অনুষ্ঠানের প্রডিউসার এবং ওই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মাহমুদুর রহমান মান্না। প্রসিকিউশনের অভিযোগে বলা হয়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর চ্যানেলে২৪ এর রাত এগারটার ‘মুক্তবাক’ নামক টকশোতে ট্রাইব্যুনালের বিচার বিষয়ে মন্তব্য করা হয়। টকশোতে ডা.জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘বিচারপতি শামীম হাসনাইন সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কেন তাকে দেয়া হয়নি। তাহলে কি বিচারের বাণী নিভৃতে কাদঁবে না?’ এছাড়া টকশোতে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী সাফাই সাক্ষীদের নিয়ে মন্তব্য করারও অভিযোগ করে প্রসিকিউশন।
Posted ২০:৪৯ | মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin