বেসরকারি সিটি ইউনিভার্সিটি ও আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির জাল সার্টিফিকেট তৈরি চক্রের মূলহোতা মো. আবু জাফরকে (৩১) গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ (দক্ষিণ)।

ডিবি বলছে, গ্রেফতার জাফর ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নকল সার্টিফিকেট বিক্রি করতেন। গ্রেফতার জাফর ও তার বন্ধু পলাতক মাসুল প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছে শতাধিক জাল সার্টিফিকেট বিক্রি করেছেন।

রোববার (১৪ জুলাই) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ২৬ মে তেজগাঁও থানায় নকল সার্টিফিকেটের বিষয়ে একটি মামলা হয়। সিটি ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার প্রফেসর মীর শওকত আলী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। সেই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে জাফরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার জাফর প্রতারণা করে সিটি ইউনিভার্সিটি এবং আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির জাল সার্টিফিকেট তৈরি করে বিক্রি করতেন। ওই চক্রের সঙ্গে আইটি বিশেষজ্ঞ জড়িত আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির একজন সাবেক শিক্ষক ও অফিস সহকারী জড়িত।

ডিবিপ্রধান বলেন, জাফর ২০১১ সালে পাবনা ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর ঢাকায় এসে মিরপুরে গার্মেন্টসে চাকরি নেন। পরে ২০২০ সালে গার্মেন্টেসের চাকরি ছেড়ে দিয়ে সোয়েটার এবং থ্রি-পিস বিক্রি শুরু করেন। এর মাঝে ২০২৩ সালে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে দালাল কাইয়ুমের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। তখন থেকেই তিনি এনআইডি, পাসপোর্ট সংশোধন ও তৈরির কাজে লিপ্ত হন।

সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের (দক্ষিণ) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) নিশাত রহমান মিথুন জানান, ২০২৩ সালে জাফরের বন্ধু মাসুদ জাল সার্টিফিকেট তৈরি করে বিক্রির প্রস্তাব দেন তাকে। পরে দুজন নকল সার্টিফিকেট বিক্রির কাজে জড়িয়ে পড়েন। গত মে মাসে সুমন নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে সিটি ইউনির্ভাসিটির নকল সার্টিফিকেট তৈরি করে বাড্ডা এলাকার এক ব্যক্তির কাছে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।

তিনি আরও জানান, জাফরের বন্ধু মাসুদ আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির দুটি নকল সার্টিফিকেট তৈরি করে ৫০ হাজার টাকায় মালয়েশিয়া প্রবাসী দুই ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেন। জাফর নিজে প্রাইভেট চাকরির জন্য দ্য কুমিল্লা ইউনিভার্সিটির জাল সার্টিফিকেট তৈরি করেন। এছাড়া তিনি ও তার বন্ধু মাসুদ মিলে শতাধিক নকল জাল সার্টিফিকেট বিভিন্ন অনলাইন গ্রুপে বিভিন্ন প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছে বিক্রি করেছেন।