শুক্রবার ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বকাপের জন্য সেরাটা বাঁচিয়ে রাখছেন মেসি?

  |   শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০১৪ | প্রিন্ট

masi

অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে পুরোপুরি ভিন্ন এক মেসিকেই যেন দেখতে পেলেন বার্সেলোনা সমর্থকেরা। এই কি সেই মেসি, যাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সই বাকরুদ্ধ করে ফুটবলপ্রেমীদের? প্রশংসা করতে গিয়ে ভাষা হারিয়ে ফেলেন ধারাভাষ্যকাররা? বিশ্বাস করতেই যেন কষ্ট হয়।

কিছু দিন ধরে মেসির খেলায় একটা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। একটু যেন গা বাঁচিয়ে খেলছেন, নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছেন না, ঝুঁকি নিচ্ছেন না। কিছু দিন ধরে ঘুরপাক খাওয়া প্রশ্নটাই সর্বশেষ ম্যাচের পর আরও জোরালো হলো—তবে কী বিশ্বকাপের জন্যই রসদ জমিয়ে রাখছেন মেসি?

বার্সেলোনার সর্বশেষ চারটি ম্যাচে একটি গোলও করেননি আর্জেন্টাইন তারকা। ২০১১ সালের পর এবারই প্রথমবারের মতো ঘটেছে এমন ঘটনা। অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে ম্যাচেও মেসি যেন খেলেননি নিজের সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে। পুরো ম্যাচে তিনি দৌড়েছেন মাত্র ৬.৫ কিলোমিটার। বার্সা গোলরক্ষক হোসে ম্যানুয়েল পিন্টোর চেয়ে মাত্র ১.৫ কিলোমিটার বেশি। এই তথ্যগুলোর কারণেই উঠে আসছে প্রশ্নটি—মেসির মনোযোগ এখন যতটা না ক্লাব ফুটবলে, তার চেয়েও বেশি যেন দুয়ারে অপেক্ষমাণ বিশ্বকাপের দিকেই।

মেসি আর্জেন্টিনার নন, কাতালানদের—চারবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের প্রতি আর্জেন্টাইনদের এই অভিযোগ অনেক দিনের। বার্সেলোনার হয়ে জাদুকরী ফুটবল খেললেও নিজ দেশের সমর্থকদের শুধু হতাশাই উপহার দিয়েছেন মেসি, বড় টুর্নামেন্টগুলোতে। এক অলিম্পিক ফুটবলে সোনা জেতা ছাড়া বলার মতো কোনো সাফল্যই এনে দিতে পারেননি আর্জেন্টিনাকে। নিজ দেশের মানুষের ভালোবাসা পেতে হলে যে বিশ্বকাপ শিরোপাটা জিততে হবে, সেটাও নিশ্চয়ই ভালোমতোই জানেন মেসি। এটাও জানা কথা যে, এবারের আসরই সেই কাজটি করার সবচেয়ে মোক্ষম সময়।

১৯৮৬ সালে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ম্যারাডোনা বিশ্বকাপ জিতেছিলেন ২৭ বছর বয়সে। বিশ্বকাপের সময় মেসিরও বয়স হবে ওই ২৭ বছর। বলা হয়, একজন ফুটবলারের সেরা সময় আসে এই বয়সটাতেই। তা ছাড়া চার বছর পর ২০১৮ সালের বিশ্বকাপটা খেলতে পারলেও ৩১ বছর বয়সী মেসির জন্য শিরোপা জয়ের কাজটা কঠিনই হবে। কাজেই যা করার সেটা এবারই করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন মেসি। ক্লাব ফুটবলে যতই অবিশ্বাস্য কীর্তি গড়ুন, মিশেল প্লাতিনিদের কাতার থেকে উঠে পেলে-ম্যারাডোনা-জিদানদের কাতারে পৌঁছাতে বিশ্বকাপ তাঁকে জিততেই হবে। এটাই মেসির সম্ভাব্য সেরা সুযোগ, সম্ভবত শেষ সুযোগও।

এই বাস্তবতা যে মেসি বোঝেন না, তাও নয়। এরই মধ্যে বার্সেলোনায় নিজের পজিশন বদলে ফেলেছেন। মূল স্ট্রাইকারের বদলে দ্বিতীয় স্ট্রাইকারের পজিশনে খেলছেন। গত ম্যাচে তো খেলেছেন ডান উইংয়ে। আগুয়েরো-হিগুয়েইন আছে জন্য আর্জেন্টিনা দলে স্ট্রাইকারও প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন এমন একজন, যিনি মাঝমাঠ থেকে খেলাটা নিয়ন্ত্রণ করবেন।

মেসি এই মৌসুমে গোল করানোর দিকেও বেশি মনোযোগী। দুই মাস মাঠের বাইরে থাকলেও এই মৌসুমে লা লিগার সর্বোচ্চ তিন অ্যাসিস্টের তালিকায় আছেন মেসি। সব মিলিয়েই মনে হচ্ছে, মেসি যেন বিশ্বকাপের জন্যই প্রস্তুত হচ্ছেন। নিজের সেরাটাও জমিয়ে রাখছেন।

এ ধরনের ঘটনা কিন্তু ফুটবল বিশ্বে একেবারে নতুনও নয়। ২০০২ ব্রাজিলের বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা ছিল রিভালদোর। কিন্তু সেই বছরই বার্সেলোনার হয়ে তিনি কাটিয়েছিলেন ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে মৌসুম। ২০০৬ সালে একই ঘটনা দেখা গিয়েছিল জিনেদিন জিদানের ক্ষেত্রেও। ফ্রান্স বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল জিদানের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ভর করে। কিন্তু সে বছরই রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে অনেকটাই নিষ্প্রভ হয়ে ছিলেন এই ফরাসি কিংবদন্তি।
ফলে মেসিও যে মনে মনে এমন ছক কষেননি, কে জানে!

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১০:৩২ | শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০১৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com