নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪ | প্রিন্ট
দেশে মাতৃমৃত্যু কমে এলেও ফিস্টুলার মতো মাতৃস্বাস্থ্য সমস্যা সে হারে কমছে না। এর অন্যতম কারণ নারীদের রোগটি সম্পর্কে ধারণা না থাকা এবং চিকিৎসা পাওয়ার স্থান সম্পর্কে না জানা। এ অবস্থায় ‘আসুন নীরবতা ভেঙে ফিস্টুলা আক্রান্ত নারীদের খুঁজে বের করি, প্রসবজনিত ফিস্টুলা প্রতিরোধ করি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সারাদেশে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফিস্টুলা সচেতনতা দিবস।
জনসচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে দিবসটি। এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ)।
বাচ্চা জন্মদানকালে নারীর যোনিপথ, মূত্রাশয় ও মলদ্বারের মাঝখানে কোনো অস্বাভাবিক পথ তৈরি হলে, এটিকে প্রসবজনিত ফিস্টুলা বলে। এর ফলে প্রস্রাব-পায়খানায় রোগীর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। চিকিৎসাবিহীন প্রলম্বিত ও বাধাপ্রাপ্ত প্রসবের কারণে এই ফিস্টুলা হয়।
জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২২-এর তথ্য অনুযায়ী, প্রসবজনিত ফিস্টুলা রোগীর ৮৯ দশমিক ৪ শতাংশের প্রথম প্রসব হয়েছিল ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সে। অর্থাৎ দেশে প্রসবজনিত ফিস্টুলার অন্যতম কারণ বাল্যবিবাহ ও কম বয়সে সন্তান নেওয়া।
বাংলাদেশে ফিস্টুলা রোগীর সংখ্যা কত, এ নিয়ে সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, আনুমানিক এক লাখ ২০ হাজার নারী প্রসবজনিত ফিস্টুলায় ভুগছেন। প্রতি এক হাজার বিবাহিত নারীর মধ্যে ১ দিন দশমিক ৬৯ জন প্রসবজনিত ফিস্টুলায় আক্রান্ত।
ইউএনএফপিএ ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের বার্ষিক প্রতিবেদনে (২০২২) দেশের ১৮টি হাসপাতালে ভর্তি ৭১৯ জন ফিস্টুলা রোগীর ওপর গবেষণা চালানো হয়। এতে দেখা গেছে, গড়ে ১৮ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর এসব রোগীর ৭০ শতাংশ পুরোপুরি সুস্থ হয়েছে।
ফিস্টুলা আক্রান্ত রোগীর ৯১ দশমিক ৯ শতাংশের বয়ঃসন্ধিকালে (১৩ থেকে ১৯ বছরে) বিয়ে হয় এবং ৮৯ দশমিক ৪ শতাংশের প্রথম প্রসব হয়। এসব রোগীর ৬৩ দশমিক ৪ শতাংশ তিন থেকে চারটি সন্তান জন্ম দিয়েছেন।
ফিস্টুলা রোগীর মধ্যে ৩০ দশমিক ৪ শতাংশের বয়স ছিল ৪০ থেকে ৪৯ বছর, ৫০ বছরের বেশি ২৮ দশমিক ৩ শতাংশ, ২৬ দশমিক ১ শতাংশের বয়স ৩০ থেকে ৩৯ বছর, ৮ দশমিক ৭ শতাংশের বয়স ২০ থেকে ২৯ বছর। এসব রোগীর ৭৯ দশমিক ৩ শতাংশের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে সার্জারি ছাড়াই ওষুধ দিয়ে এই রোগের চিকিৎসা সম্ভব। প্রসব ব্যথা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে। রোগ হলে তা প্রকাশ করতে হবে। ফিস্টুলা নিয়ে এখনই সকলকে সচেতন হতে হবে।
Posted ০৭:৩৬ | শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain