নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট
জাকাত ফরজ ইবাদত এবং ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ। পবিত্র কোরআনে যেখানে নামাজের কথা এসেছে, সেখানেই দেখা যায় জাকাতের কথা। সুরা বাকারার এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, সালাত প্রতিষ্ঠা করেছে এবং জাকাত দিয়েছে, তাদের প্রতিদান রয়েছে তাদের রবের নিকট। আর তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।’ (সুরা বাকারা: ২৭৭)
সব ধরনের সম্পদের ওপর জাকাত ফরজ হয় না। শুধুমাত্র সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা, পালিত পশু এবং ব্যবসার পণ্যে জাকাত ফরজ হয়। বর্তমানে বাসা-বাড়ি নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া ব্যবসার অন্তর্ভুক্ত। প্রশ্ন হলো—ভাড়ার উদ্দেশ্যে নির্মিত বাড়ি ও মার্কেটের ওপর জাকাত আসবে কি না? এর উত্তর হলো— বাড়ি ও মার্কেটের মূল্যের ওপর জাকাত আসবে না। তবে এগুলো থেকে অর্জিত অর্থ (ভাড়া) যদি নিসাব পরিমাণ হয়, তাহলে বছরান্তে জাকাত আসবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ২/১৬, আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল: ৬/১১৪, ফতোয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত: ৫২৭)
আবার, ব্যবসার নিয়তে কোনোকিছু ক্রয় করলে তা স্থাবর সম্পত্তি হোক—যেমন জমি-জমা, ফ্ল্যাট কিংবা অস্থাবর সম্পত্তি হোক—যেমন মুদী সামগ্রী, কাপড়-চোপড়, অলংকার, নির্মাণ সামগ্রী, গাড়ি, ফার্নিচার, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী, হার্ডওয়ার সামগ্রী, বইপুস্তক ইত্যাদি— তা বাণিজ্য-দ্রব্য বলে গণ্য হবে এবং মূল্য নিসাব পরিমাণ হলে জাকাত দেওয়া ফরজ হবে। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৭১০৩-৭১০৪)
ব্যবসার নিয়ত না থাকলে ফ্ল্যাট, বাড়ি বা জায়গা-জমির ওপর জাকাত ওয়াজিব হবে না। ‘জমির ওপর জাকাত ওয়াজিব হওয়ার শর্ত হচ্ছে, তা ক্রয়ের সময় ব্যবসার নিয়ত করা। যদি ক্রয়ের পর ব্যবসার নিয়ত করে বা এই নিয়তে যদি ক্রয় করে যে, যদি লাভ হয় তাহলে বিক্রি করে দেবে তাহলে জাকাত ওয়াজিব হবে না।’ (আদ দুররুল মুখতার, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-২২৯)
নিসাব কী?
জাকাত ফরজ হওয়ার জন্য সম্পদের নির্ধারিত পরিমাণকে জাকাতের নিসাব বলে। জীবনযাত্রার প্রয়ােজনীয় ব্যয় নির্বাহের পর যদি বছরশেষে কমপক্ষে সাড়ে ৭ তােলা সােনা অথবা কমপক্ষে সাড়ে ৫২ তােলা রুপা অথবা এ পরিমাণ মূল্যের সম্পদ কারো কাছে অবশিষ্ট থাকে, তার জন্য জাকাত আদায় করা ফরজ। এ পরিমাণ সম্পদে সােনা, রুপা বা সম্পদের মূল্যের ৪০ ভাগের এক ভাগ জাকাত দিতে হবে। এটাই হচ্ছে জাকাতের নিসাব। এছাড়াও ফসল ও পশুর ওপরও জাকাত ধার্য হয়।
জাকাতের পরিমাণ
যে সম্পদের ওপর জাকাত ফরজ, তার ৪০ ভাগের এক ভাগ (২.৫ শতাংশ) জাকাত দেওয়া ফরজ। সম্পদের মূল্য নির্ধারণ করে শতকরা আড়াই টাকা বা হাজারে ২৫ টাকা হারে নগদ অর্থ কিংবা ওই পরিমাণ টাকার কাপড়চোপড় বা অন্য কোনো প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে দিলেও জাকাত আদায় হবে। (আবু দাউদ: ১৫৭২, সুনানে তিরমিজি: ৬২৩)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শরিয়তের নির্দেশনা অনুযায়ী জাকাত আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন। সূএ : ঢাকা মেইল ডটকম
Posted ০৮:৪৯ | সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain