| রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট
স্টাফ রিপোর্টার : রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা ফ্যাসিবাদের চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছেছে উল্লেখ করে জনগণকে নিপীড়নের ক্ষেত্রে কিছু গণমাধ্যম রাষ্ট্রের সহযোগি ভুমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক নেতারা। তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবি না জানিয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা দালালের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। কিন্তু মিথ্যার ওপর ভর করে কেউ বেশিদিন টিকে থাকতে পারেনি। সারা দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। মিথ্যার প্রাসাদ একদিন ভেঙ্গে পড়বেই। তখন গণবিরোধী অবস্থানের কারণে সরকারের পাশাপাশি মিডিয়াকেও কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গনে ‘বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবিতে’ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ থেকে অবিল¤ে¦ বন্ধ গণমাধ্যমগুলো খুলে দেয়ার দাবি জানানো হয়।
বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, বিএফইউজের সিনিয়র সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রোকন, ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব ডা.এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, বিএসএমএমইউ’র অথ্যপেডিক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সিরাজউদ্দিন আহমেদ, ডিইউজের যুগ্ন সম্পাদক শাহীন হাসনাত, সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক মুহাম্মদ, সাবেক সহ-সভাপতি মাঈনুদ্দিন, প্রচার সম্পাদক আকন আবদুল মান্নান, ডিইউজের দৈনিক সংগ্রাম ইউনিট প্রধান শহিদুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য প্রত্যয় চৌধুরী, বন্ধ মিডিয়া ইসলামিক টিভির হেড অব নিউজ সাদ বিন রাবি, মাহমুদুর রহমান মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক রেজাউল কবির শিকদার রেজা প্রমুখ।
সভাপতির বক্তৃতায় বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, বর্তমানে রাষ্ট্র ব্যবস্থা ফ্যাসিবাদের চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছেছে। দুর্নীতি-দু:শাসনের কারণে সারা দেশের মানুষ সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রধানমন্ত্রী জনগণের ভোটারাধিকার নিশ্চিত করার কথা বলে ১৫৪টি আসনের পাঁচ কোটি মানুষকে তাদের ভোটারাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ভোটার বিহীন একতরফার তামাশার নির্বাচন সাংবাদিকরা কখনো মেনে নেবে না। আমার দেশ, দিগন্ত ও ইসলাম টিভি চালু ও সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে মুক্ত না করা পর্যন্ত সাংবাদিকরা ঘরে ফিরে যাবে না। মানুষ জেগে উঠেছে। শেখ হাসিনার ক্ষমতার মসনদ ভেঙ্গে যাবে। চুড়ান্ত আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারের পতন ঘটিয়ে বন্ধ গণমাধ্যমকে মুক্ত করা হবে।
কিছু গণমাধ্যমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, জনগণকে নিপীড়নের ক্ষেত্রে এসব গণমাধ্যম রাষ্ট্রের সহযোগি ভুমিকা পালন করছে। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবি না জানিয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা দালালের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। ক্ষমতার পরিবর্তন হলে গণবিরোধী অবস্থানের কারণে সরকারের পাশাপাশি এসব গণমাধ্যম ও তাঁর কর্মীদেরও কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
দেশ বর্তমানে কঠিন ষড়যন্ত্রের সম্মুখিন মন্তব্য করে সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, শেখ হাসিনা একদলীয় প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে দেশকে ভয়াবহ সঙ্কটের মুখে ঠেলে দিয়েছেন। জনগণের ভোট ছাড়াই ১৫৪জন বিজয়ী হওয়ার তামাশার নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করতে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে। সারা দেশে পাখির মতো গুলি চালিয়ে নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। আমার দেশ, দিগন্ত ও ইসলামিক টিভিসহ বন্ধ গণমাধ্যম চালু ও সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্ব চিরতরে নস্যাৎ করতে শেখ হাসিনা উঠেপরে লেগেছে। কিন্তু আমাদের নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। এর বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। মিথ্যার প্রাসাদ একদিন ভেঙ্গে পড়বেই।
চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে চিকিৎসকদের মানববন্ধন : এদিকে ২০১০ সালের ২২ ডিসে¤¦র অন্যায়ভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ¡বিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারিকে চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদ ও চাকরিতে তাদের পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন করেছে চিকিৎসকরা। গতকাল রোববার দুপুরে সর্বস্তরের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দের ব্যানারে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে চিকিৎসক, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নেন। ২০১০ সালের পর থেকেই ২২ ডিসে¤¦রকে চিকিৎসকরা কালো দিবস হিসেবে পালন করে আসছেন।
চাকরিচ্যুত বিএসএমএমইউ-এর অধ্যাপক ডা. আবদুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে মানববন্ধনোত্তর সমাবেশে বক্তৃতা করেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সহ-সভাপতি ডা. আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব ডা.এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, বিএসএমএমইউ’র অথ্যপেডিক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সিরাজউদ্দিন আহমেদ, ডা. সৈয়দ আকরাম হোসেন, শফিকুল ইসলাম রতন, আখতারুজ্জামান প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন ডা. সাইফুদ্দিন নেছার আহমেদ।
সমাবেশে বক্তারা বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএসএমএমইউ’র বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারিকে চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদ এবং অবিল¤ে¦ এসব চাকরিচুতদের পুর্বের পদে পুনর্বহালের দাবি জানান।
Posted ২৩:১৮ | রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin