| মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট
স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় প্রেস ক্লাব নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করায় আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঢাকার পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদকে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। তারা বলেন, প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মকর্তা হয়ে জাতীয় একটি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে এমন মন্তব্য করে তিনি গর্হিত কাজ করেছেন। এসময় বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়া, সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি ও সাগর-রুনির হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত সাংবাদিকদের আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন সাংবাদিক নেতারা।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গনে প্রতিবাদ সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবে সরকার দলীয় ক্যাডারদের হামলার প্রতিবাদ ও বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। প্রেস ক্লাবে সরকার দলীয়দের হামলার বিষয়ে সোমবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘প্রেস ক্লাবে জঙ্গিরা মিটিং করে।’ পুলিশ কমিশনারের ওই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন।
বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তৃতা করেন, ডিইউজের সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বিএফইউজের সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম কাগজী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ন সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, ডিইউজের সহ-সভাপতি খন্দকার হাসনাত পিন্টু, সাবেক সহ-সভাপতি ছড়াকার আবু সালেহ, ইনকিলাবের সিনিয়র সহকারি সম্পাদক আবদুল আউয়াল ঠাকুর, ডিইউজের যুগ্ন সম্পাদক শাহীন হাসনাত, কোষাধ্যক্ষ এম এ নোমান, ডিইউজে সংগ্রাম ইউনিট প্রধান শহিদুল ইসলাম, বাসসের আবুল কালাম মানিক, এ্যাব নেতা প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ড্যাব নেতা মোস্তফা রহিম স্বপন, ঢাবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি এম এম জসিম, সাংবাদিক নেতা কাজিম রেজা, দিদারুল আলম প্রমুখ।
সভাপতির বক্তৃতায় রুহুল আমিন গাজী বলেন, আমিসহ সাংবাদিকদের হত্যার উদ্দেশেই গত রোববার প্রেস ক্লাবে আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে ওই হামলা চালানো হয়েছিল। কিন্তু ওই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় ঢাকার পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেস্টার বক্তব্যে জাতি হতাশ হয়েছে। জাতীয় প্রেস ক্লাব নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করায় আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঢাকার পুলিশ কমিশনারকে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যথায় সাংবাদিকরা এর সমুচিত জবাব দিবে। এসময় তিনি আমার দেশ, দিগন্ত ও ইসলামিক টিভি চালু, সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি, সাগর-রুনি হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত সাংবাদিকদের আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। একই দাবিতে আগামী বৃহস্পতিবার প্রেস ক্লাবে সমাবেশের ঘোষণা দেন তিনি।
কবি আবদুল হাই শিকদার তার বক্তৃতায় পুলিশ কমিশনারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, সাগর-রুনির হত্যার বিচার করতে না পারলেও পুলিশ কমিশনার প্রেস ক্লাবে জঙ্গি খোজেন। তার নেতৃত্বে শাপলা চত্বরে নিরীহ আলেমদের হত্যা করা হয়েছে, এর বিচার একদিন জনগণ আদায় করবে। বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের সমালোচনা করে সাংবাদিক এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ে তার মন্তব্য করার কোন অধিকার নেই। তিনি বলেন, সীমান্ত অরক্ষিত রেখে বিজিবির সদস্যরা যৌথ বাহিনীর নামে নিরীহ মানুষকে হত্যা করছে, বিরোধী দলের আন্দোলন দমন করছে।
ইলিয়াস খান বলেন, দেশে বর্তমানে কঠিন ক্রান্তিকাল চলছে। জাতির ঘারে এই সরকার জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছে। ৫৬ হাজার বর্গমাইল আজ সন্ত্রাসের রাজত্বে পরিণত হয়েছে। এ সরকারকে হটাতে না পারলে জনগণের জীবনে শান্তি আসবে না, বন্ধ গণমাধ্যম চালু হবে না, সাহসী সম্পাদক মাহমুদুর রহমান মুক্তি পাবে না।
পুলিশ কমিশনারের বক্তব্যের সমালোচনা করে কাদের গণি চৌধুরী বলেন, প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মকর্তা হয়ে প্রেস ক্লাব নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করে তিনি গর্হিত কাজ করেছেন। জাতির কাছে তিনি ক্ষমা না চাইলে তাকে বহিস্কার করতে হবে।
Posted ২১:৫১ | মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin