| রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট
বাসস : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে হরতালের নামে নিরীহ মানুষ হত্যার অভিযোগ করে বলেছেন, তার পিপাসা মেটাতে আর কত রক্তের প্রয়োজন। বিরোধীদলীয় নেতা সন্ত্রাস ও ধ্বংসলীলা চালিয়েও খুশি নন। তিনি আরও ধ্বংস আর অরাজকতা চান। তার আরও রক্তের প্রয়োজন। তিনি বলেন, আমি জানি না, আর কত রক্ত হলে তার পিপাসা মিটবে। আমি তার কাছে জানতে চাই, তিনি আর কত মানুষের রক্ত নেবেন।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল বিকালে রাজধানীতে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে গত ১১ এপ্রিল চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে জামায়াত-হেফাজতের হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে চেক প্রদানকালে তিনি এ কথা বলেন। তিনি এই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তারা দেশের উন্নয়ন নয়, কেবল লাশ চায়।
শেখ হাসিনা বলেন, অশুভ শক্তিগুলো বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে দেখতে চায় না। তারা অতীতে খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের মদত জুগিয়েছে, এখন তারা খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমতায় আনতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দল নিরীহ মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। শিশু থেকে শ্রমজীবী মানুষ কেউ তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। তিনি হরতালের নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালানো থেকে বিরত থাকতে বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাদের আন্দোলনে জনগণের সম্পৃক্ততা নেই।
শেখ হাসিনা বিরোধী নেতার উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার ধারণা, এ ধরনের ধ্বংসাত্মক ও সহিংস কর্মকাণ্ডের জন্য জনগণ আপনাকে বাহবা দেবে। কিন্তু আমি মনে করি জনগণ এ ধরনের অরাজকতা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।’ তিনি বলেন, বিরোধী দল হরতালের নামে নিরীহ লোকদের হত্যা করছে। তারা চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে মানুষ মারছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা শুধু সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে। শেখ হাসিনা বিরোধী নেতাকে দেয়া আলোচনার প্রস্তাব সম্পর্কে বলেন, তিনি দেশ ও জনগণের স্বার্থে তাকে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘বিরোধী নেতা যে ভাষায় আমার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করলেন, তা মোটেই শোভন ছিল না। এটি রাজনৈতিক ভাষা হতে পারে না। তিনি আমাকে বলেন, তিনি আমার সঙ্গে বসবেন না।’ তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত সরকারের পাঁচ বছরের শাসনকালে বাংলাদেশ একটি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল। বিএনপি-জামায়াত সেই কালো অধ্যায়কে আবার ফিরিয়ে আনতে চায়।
আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে তার দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, আগামী নির্বাচন সেভাবেই অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। জনগণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অস্থায়ী সরকার দেখতে চাই না।’ শেখ হাসিনা হরতালের নামে যারা সহিংসতা ছড়িয়ে দিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করতে সহায়তা করার জন্য মিডিয়ার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি ফটিকছড়িতে জামায়াত-হেফাজতের সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানান এবং এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে আবার ঘটতে না পারে সে জন্য তার দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ফটিকছড়ির সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত ২০২ জনের মাঝে চেক বিতরণ করেন। গত ১১ এপ্রিল চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুরের কাজিরহাটে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হরতালবিরোধী সমাবেশে জামায়াত-শিবির ও হেফাজতে ইসলাম হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগের ৩ জনকে হত্যা এবং ১০ পুলিশ সদস্যসহ অপর ৫০ জনকে আহত করে। নিহতরা হলেন ফোরকান (২৪), মো. রুবেল (২২) ও ফারুক ইকবাল বিপুল (৪০)।
জামায়াত-হেফাজতের ক্যাডাররা ঘণ্টাব্যাপী সহিংস কার্যক্রমে মোটরসাইকেল, জিপ, পিকআপ, একটি পুলিশভ্যান ও একটি ফায়ার সার্ভিসের ট্রাকসহ প্রায় ১০০টি গাড়িতে আগুন দিয়ে ভস্মীভূত করে। আহতদের মধ্যে অন্তত ১৫ পুলিশ সদস্য, ৪ দমকল কর্মী এবং ২ বিজিবি সদস্য রয়েছেন।
Posted ০৩:১৯ | রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin