| সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট
জেলা প্রতিনিধি, ফেনী : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ফেনীর এক সময়ের আলোচিত গডফাদার জয়নাল হাজারী।
সোমবার জেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে ফেনীর তিনটি সংসদীয় আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
জয়নাল হাজারী ফেনী-২ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ও ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে তিনি ফেনী-১ (পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া), ফেনী-২ (সদর উপজেলা) ও ফেনী-৩ (দাগনভূঞা-সোনাগাজী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
জয়নাল হাজারী ছাড়াও ফেনী-১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত জেলা আওয়ামী লীগ নেতা খায়রুল বাশার মজুমদার তপন, জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা শিরিন আক্তার, জাতীয় পার্টির গোলাম মাওলা, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মীর আবদুল হান্নান, নতুন দল বিএনএফের শাহরিয়ার জলিল।
ফেনী-২ আসনে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী।
ফেনী-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল বাশার, আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী জেদ্দা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী রহিম উল্যাহ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের উপদেষ্টা আনোয়ারুল কবির রিন্টু আনোয়ার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, দলীয়পদ ও মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হলেও আবারো রাজনীতির মাঠে নামার প্রস্তুতি নিয়েছেন জয়নাল হাজারী। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিতকির্ত কর্মকাণ্ডের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ হারান তিনি। এরপর অনেক তদবির করেও নেত্রীর মন গলাতে পারেননি।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সময় যৌথবাহিনীর অভিযান চলাকালে (অপারেশন ক্লিনহার্ট) ২০০১ সালের ১৭ আগস্ট মধ্য রাতে কয়েকজন সহযোগীসহ ফেনীর মাস্টারপাড়াস্থ শৈলকুটির থেকে আত্মগোপন করেন জয়নাল হাজারী। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৭ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তিনি দেশে ফিরেন। তার নামে বিভিন্ন থানায় দায়েরকৃত মামলাগুলোও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবেচনায় প্রত্যাহার করা হয়েছে।
গত ৯ মে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মতবিনিময় সভায় জয়নাল হাজারীকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কৃত ও প্রাথমিক সদস্য পদেও না থাকা হাজারির গণভবনে উপস্থিতি নিয়ে ফেনী আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
তবে ওই সভায় তিনি একাকী বসে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীকে কিছু বলার সুযোগও পাননি। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিরকুট দিয়েছিলেন কিন্তু তিনি তা না পড়েই ছিঁড়ে ফেলেন বলে জানান সভায় উপস্থিত এক নেতা।
গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে ফেনী-২ আসনের তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য এক সময়ের আলোচিত গডফাদার, ফেনীর মুকুট বিহীন সম্রাটখ্যাত চিরকুমার জয়নাল হাজারীর সাধারণ সম্পাদক পদে স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তারই তৎকালীন শিষ্য (অনুজ) বর্তমান পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন হাজারী।
২০০১ সালের ১৭ আগস্ট দেশের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার পর হাজারী পর্দার আড়ালে চলে যান। এরপর ২০০৯ সালের ২২ ফেব্রয়ারি দেশে ফেরেন। তিনি ওই বছরের ১৪ এপ্রিল আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর জামিন পান।
জয়নাল হাজারী ২০০৫ সালের ১ অক্টোবর আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হন।
Posted ১৭:১১ | সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০১৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin