ঢাকা : স্বাধীনতার শহিদদের তালিকা ৪২ বছরে করা সম্ভব হয়নি, আর হেফাজত দুই মাসে তাদের নিহত আহতদের তালিকা প্রকাশ করে ফেলবে?’
হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশে নিহতদের তালিকা প্রকাশ করা মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের তালিকা তৈরীর মতোই কঠিন বলে মন্তব্য করেছে ফরহাদ মজহার। অধিকারের পক্ষ থেকে নিহত হেফাজত–কর্মীর সংখ্যা প্রকাশ করেও নাম–পরিচয় গোপন রাখার সপক্ষে যুক্তিও দেখিয়েছেন ফরহাদ মজহার। অধিকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সংগঠনটি এখন পর্যন্ত ৬১ জন নিহত হওয়ার প্রমাণ পেয়েছে। এই মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। কিন্তু পরিচয় প্রকাশ না করায় অসত্য তথ্য প্রকাশের অভিযোগে তথ্য প্রযুক্তি আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সেক্রেটারি আদিলুর রহমানকে।
ফরহাদ মজহারসহ সুশীল সমাজের একটি অংশ বলছেন, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করতেই অধিকার এই হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করেছে।
‘ভালোই তো, ভালো না!’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধে ফরহাদ মজহার বলেন, “অধিকার সম্প্রতি ‘হেফাজতে ইসলাম–এর সমাবেশ ও মানবাধিকার লংঘন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ‘অধিকার’-এর প্রতিবেদনটি হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের ওপর সরকার যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে সেই ক্ষেত্রে বাস্তবে কি <
/span>
ঘটেছে নানান সাক্ষীসাবুদের ভিত্তিতে তৈরী করা প্রতিবেদন। তবে চলমান।”
প্রতিবেদন সম্পর্কে ফরহাদ মজহার বলেন, “রিপোর্ট প্রকাশ করবার দিন অবধি তারা ৬১ জন বাংলাদেশের নাগরিকের শহিদ হবার একটি প্রাথমিক কিন্তু অসম্পূর্ণ তালিকা পেশ করেছে। আবারও বলছি, অধিকারের বক্তব্য হচ্ছে, এই অনুসন্ধান চলমান, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে, এতে কোন সন্দেহ নাই।”
৬১ জন নিহতের নাম গোপন রাখা প্রসঙ্গে ফরহাদ মজহার বলেন, হেফজতে ইসলামের ওপর যে অকথ্য দমন–নিপীড়ন চলছে তার ফলে অবিলম্বে কোন তালিকা হাজির করা তাদের পক্ষে সহজ নয়। তাছাড়া গ্যারান্টি কি যে সরকার নাম ঠিকানা পরিচয়সহ তালিকা পাবার পর পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করবে না?
এছাড়াও, ফরহাদ মজহার বলেন, অভিযোগ করে বলা হয়– অধিকার ‘রীতিমতো হেফাজত–জামায়াতের ভাষায়’ কথা বলে। তার মানে হেফাজত–জামায়াত নাগরিক ও মানবিক অধিকারের ভাষায় কথা বলে, কারণ এটাই ‘অধিকার’-এর ভাষা, আদর্শ ও রাজনীতি। ভালো তো, ভালো না? মজহার আরো বলেন, “দুই মাসেও হেফাজত নিহতদের তালিকা প্রকাশ করতে পারে নি। বিলকুল ঠিক। কিন্তু আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি একাত্তর সালে। ইতোমধ্যে ৪২ বছর চলে গিয়েছে। তিরিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে এ দেশের যে স্বাধীনতা, সেই স্বাধীনতার শহিদদের তালিকা ৪২ বছরে করা সম্ভব হয়নি, আর হেফাজত দুই মাসে তাদের নিহত আহতদের তালিকা প্রকাশ করে ফেলবে? এতে তো আমরাই বিপদে পড়ে যাবো। তাতে কি আমরা এই অভিযোগ সহ্য করব আমাদের তিরিশ লক্ষ শহিদের সংখ্যার তথ্য ‘আবিষ্কৃত’। অথবা আমরা অযোগ্য। অথবা মুক্তিযুদ্ধ ও তার শহিদদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এই তথ্য লুকিয়ে রেখেছি। অথচ হেফাজতে ইসলামকে এই অতিকথনগুলো সহ্য করতে হচ্ছে।”
এছাড়াও, বাংলাদেশ সরকারকে ৭১’র যুদ্ধ চলার সময় খুনি পাকিস্তানী সরকার ও সেনাবাহিনীও সাথে তুলনা করেছেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, “খুনি পাকিস্তানী সরকার ও সেনাবাহিনীও বারবার বলেছিল গণহত্যার যে–অভিযোগ তোলা হচ্ছিলো সেইসব মিথ্যা। শেখ হাসিনার সরকারের মতো দাবি করেছিল যারা নিহত হয়েছে তাদের নাম ঠিকানা তালিকা সরকারের কাছে জমা দেবার। উদ্দেশ্য সেই তালিকা মোতাবেক শহিদের পরিবারকে ধরা এবং তাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালানো। শেখ হাসিনার সরকারও এই জন্যই তালিকা চায়।”
For News : news@shadindesh.com
Like this:
Like Loading...
Related