নওগাঁ : নওগাঁর মান্দায় ফুটবল খেলা নিয়ে বিরোধের জেরে শরিফ উদ্দিন সোনার (২৩) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার কশব ইউপি’র তুড়ুকবাড়িয়া গ্রামের আকন্দ পাড়ায় নৃশংস হত্যাকান্ডের এ ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে থানা পুলিশ। নিহত শরিফ সোনার কশব ইউপি’র তুড়ুকবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা গ্রাম পুলিশ সাহাবুদ্দিন ওরফে সাহেব আলীর ছেলে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি ছিলেন। অভিযুক্ত যুবকেরা হলেন, একই গ্রামের সুলতান আকন্দ (২৩) ও পারভেজ আকন্দ (২৪)। ঘটনায় নিহতের পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বর্তমানে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত শরিফের বাবা গ্রাম পুলিশ সাহাবুদ্দীন সোনার বাদি হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩ থেকে ৪জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
নিহতের বাবা সাহাবুদ্দীন সোনার বলেন, গত বৃহস্পতিবার (৪জুলাই) তুড়কবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে আমার ছেলে শরিফের সাথে প্রতিবেশি সুলতান ও পারভেজের বিরোধ শুরু হয়। পরে স্থানীয়রা মীমাংসার চেষ্টা করেন। এ অবস্থায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ছেলে শরিফ স্থানীয় জানবক্সের মোড়ে চা খেয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় শরিফের উপস্থিতি টের পেয়ে একই গ্রামের আহম্মদ আলী আকন্দের ছেলে সুলতান আকন্দ, জিয়াউর রহমানের ছেলে পারভেজ আকন্দ ধারালো হাসুয়া দিয়ে পেছন থেকে শরিফের পিঠে কোপ দেয়। কোপ খেয়ে আহত শরিফ সেখান থেকে দৌড় দিলে রাস্তার ওপর পড়ে যায়। এরপর আবারও শরিফের পিঠে ধারালো হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
বাদি সাহাবুদ্দীন সোনার আরও বলেন, ছেলে শরিফ উদ্দিন জীবন বাঁচাতে দৌড়ে বাড়ির বারান্দায় এসে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে ছেলে শরিফ মারা যায়। এদিকে শরিফের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সুলতান ও পারভেজের বাড়ি ঘেরাও করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় অভিযুক্ত সুলতান আকন্দের মা সেলিনা ওরফে সেলি বিবিকে (৪৫) গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। রাতেই নিহত যুবকের লাশ উদ্ধার করে বুধবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
ওসি আরও বলেন, ঘটনায় নিহতের বাবা সাহাবুদ্দীন সোনার পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় আসামি সুলতানের মা সেলিনা বিবিকে গ্রেফতার করে বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে নওগাঁ জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
Like this:
Like Loading...
Related