মঙ্গলবার ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তারেক রহমানের ‘ফেরা’

  |   সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট

28954-tareq
 
tareq
ঢাকা : হঠাৎ করেই জটিল হয়ে গেল রাজনীতির সমীকরণ। হিসাব মিলছে না। কোথা থেকে কি হয়ে গেল বুঝতে পারছেন না কেউই। একটি সারপ্রাইজ রায় উলট-পালট করে দিয়েছে সব কিছু। রাজনীতির লড়াই আদালতে স্থানান্তর হওয়া অবশ্য এ ভূমে নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশে বেশির ভাগ রাজনৈতিক ইস্যুরই মীমাংসা হয়েছে আদালতপাড়ায়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মৃত্যুও হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের টেবিলে।

বিএনপির দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি ছিল ভিন্ন। মোড়ে মোড়ে সাঁজোয়া যান নিয়ে প্রস্তুত ছিল পুলিশ। কোথাও কোথাও বিজিবি-ও মোতায়েন করা হয়েছিল। সারপ্রাইজ রায়ের পর অবশ্য কোন কিছুই কাজে লাগেনি। তারেক রহমান অর্থ পাচার মামলায় খালাস পাওয়ায় বহুদিন পর একটি বড় সুসংবাদ পেলো জিয়া পরিবার। বিএনপিতেও ফিরে এসেছে স্বস্তি। যদিও আড়ালে থেকে বড় কোন শক্তি খেলছে কিনা এ নিয়েও কানাঘুষা রয়েছে। হাজার হাজার মাইল দূরে লন্ডনে বসে তারেক রহমান কি ভেবেছিলেন তা জানা যায়নি। তবে নিশ্চিতভাবেই এ রায়টি তার জীবনে একটি বড় টার্নিং পয়েন্ট হিসেবেই এসেছে। বিএনপির রাজনীতি বদলাতে চেয়েছিলেন তারেক রহমান। ড্রইং রুম থেকে রাজনীতিকে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তৃণমূলে। ফসলের উন্নত বীজ আর দেশের আয়তন বাড়ানোর চিন্তাও ছিল তার। এক যুগের বেশি সময়ের রাজনীতির ক্যারিয়ারে সাংগঠনকিভাবে বিএনপিতে সবচেয়ে কার্যকর নেতা হিসেবেই অভিষিক্ত হন তিনি। যদিও তরুণদের বেশি গুরুত্ব দেয়ার জন্য নিজ দলেও সমালোচনা আছে তার। তবে তারেক রহমানকে সবচেয়ে বেশি পুড়িয়েছে বিরোধীদের বাক আক্রমণ। জোট জমানায় হাওয়া ভবনে ক্ষমতার দ্বিতীয় কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। বিরোধীপক্ষের রাজনীতিবিদেরা তাদের প্রতিটি বক্তব্যে দুর্নীতি আর অর্থ পাচারের অভিযোগ আনেন তারেক রহমানের বিরুদ্ধে। এ যেন এক নিয়মিত পরিবেশনা। বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছিলেন তিনি। দুর্নীতির কেন্দ্র নয়, হাওয়া ভবনকে অভিহিত করেছিলেন গবেষণার কেন্দ্র হিসেবে। এক-এগারো তার জীবনে নিয়ে আসে চরমতম বিপর্যয়। মা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাকে। তবে তারেক রহমানের সঙ্গে নির্মমতার কাহিনী সেখানেই শেষ হয়নি। যৌথ বাহিনীর হেফাজতে থাকার সময় তার ওপর চালানো হয় নির্যাতন। যে নির্যাতনে পিঠের হাড় ভেঙে যায় তারেক রহমানের। পরে সুপ্রিম কোর্টের জামিনে চিকিৎসার জন্য চলে যান বৃটেনে। ফখরুদ্দীন সরকারের পর মহাজোট সরকারের আমলেও তার বিরুদ্ধে একের পর এক দায়ের করা হয় মামলা। সবচেয়ে উচ্চকিত অভিযোগ তিনি বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন। এফবিআই তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। এতে জাতির মাথা হেঁট হয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিটি জনসভাতেই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তারেক রহমানের বিদেশে অর্থ পাচারের কথা। ক্ষমতাসীন অন্য নেতারাও একই অভিযোগ তুলেছেন। এখন তারা কি বলবেন তা-ই হবে দেখার বিষয়।

তৃণমূলের রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন তারেক রহমান। ঘুরে বেড়িয়েছেন ইউনিয়ন থেকে ইউনিয়নে, গ্রাম থেকে গ্রামে। তার বিরুদ্ধে চলা দিনের পর দিন প্রচারণা কিছুটা হলেও আঁচড় কেটেছিল তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মনে। তবে একটি রায়ে বদলে গেছে দৃশ্যপট। বিরুদ্ধ শক্তি ক্ষমতায় থাকতেও আদালতের রায়ে নির্দোষ প্রমাণিত হলেন তিনি। বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে থেকেও এ রায়ে তারেক রহমান ফিরে গেছেন আবার তৃণমূলে। যে তৃণমূলই তার রাজনীতির ধ্যান-জ্ঞান। এ এক রাজনীতিবিদের পুনরুত্থানের কাহিনী।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০১:০৮ | সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৩

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com