নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট
মানুষ শখের বসে বাসায় বা খাঁচায় পাখি পুষে। ছোট ছেলে-মেয়েদের আবদার রক্ষায়ও অভিভাবকরা পাখি কিনেন এবং পালন করেন। কিন্তু বিষয়টি শরিয়তের দৃষ্টিতে কেমন, পরিচর্যার পরিবেশ না থাকলে বা নিয়মিত খাবার-পানি দেওয়া সম্ভব না হলে পাখি পোষা শরিয়তের দৃষ্টি কতটা গ্রহণযোগ্য তা জানা উচিত।
ফিকহের কিতাবগুলো রয়েছে, খাবার-পানির সঠিক ব্যবস্থা করে এবং কোনো ধরনের কষ্ট না দিলে— খাঁচায় বন্দি করে পাখি পোষা জায়েজ। (আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল: ৪/৪৫৪, ফতোয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত: ১১/১৭৩)
কিছু সাহাবি খাঁচায় পাখি রেখে লালন-পালন করেছেন বলে হাদিসে এসেছে। হিশাম ইবনে উরওয়া (রা.) বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের (রা.) মক্কায় ছিলেন। তখন সাহাবিরা খাঁচায় পাখি রাখতেন।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ: ৩৮৩)
আনাস (রা.) বলেন, ‘আমার এক ভাই ছিল; তাকে আবু উমায়ের বলে ডাকা হতো। সে তখন মায়ের দুধ খেত না। যখনই সে নবী (স.)-এর কাছে আসত, তিনি বলতেন, হে আবু উমায়ের! কী করছে তোমার নুগায়ের? (একটি পাখির নাম।) সে নুগায়েরকে নিয়ে খেলত। তিনি আমাদের ঘরে নামাজের জন্য দাঁড়াতেন এবং আমরাও তার পেছনে দাঁড়াতাম। আর তিনি আমাদের নিয়ে নামাজ আদায় করতেন।’ (বুখারি: ৬১২৯; মুসলিম: ২১৫০)
সুতরাং খাঁচায় বা বাসায় বন্দি করে পাখি পালতে গেলে যথাযথভাবে পাখিগুলোর পরিচর্যা সম্ভব কি না খেয়াল রাখতে হবে। দানাপানি দিতে না পারলে বা পরিচর্যা করা সম্ভব না হলে কিংবা বন্দি করে রাখার কারণে পাখি কষ্ট পেলে— খাঁচায় আটকে রাখা জায়েজ হবে না। বরং ছেড়ে দেওয়া আবশ্যক। ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (স.) বলেন—
এক নারীকে একটি বিড়ালের জন্য শাস্তি দেওয়া হয়েছে। সে তাকে বেঁধে রেখেছিল এবং অবশেষে বিড়ালটি মারা গিয়েছিল, পরিণতিতে নারী তারই কারণে জাহান্নামে প্রবেশ করল। সে যখন তাকে বেঁধে রেখেছিল, তখন তাকে আহার ও পানি দিত না এবং তাকে ছেড়েও দিত না যে, সে কীটপতঙ্গ ধরে খাবে।’ (বুখারি: ২৩৬৫; মুসলিম: ২২৪২)
প্রসঙ্গত খেয়াল রাখা উচিত যে, খাঁচায় বন্দি করলে— যেসব পাখির কষ্ট হতে পারে, সেগুলোকে খাঁচায় বন্দি না করাই উচিত। (তথ্যসূত্র: বুখারি: ৬২০৩; ফাতহুল বারি: ১০/৬০১; ফতোয়ায়ে কারিইল হেদায়া, পৃষ্ঠা-২০০; রদ্দুল মুহতার: ৬/৪০১) সূএ: ঢাকা মেইল ডটকম
Posted ০৯:৪৭ | বুধবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain