নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন ২০২৩ | প্রিন্ট
কোরবানির পর পশুর গোশত কী করবেন; কিংবা কতদিন জমা রেখে খাবেন। এ সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনাই বা কী? কেননা কোরবানি আল্লাহর নৈকট্য লাভে আত্মত্যাগের অনন্য ইবাদত। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) হিজরতের প্রতি বছর কোরবানি করেছেন। তিনি কখনো কোরবানি পরিত্যাগ করেননি; বরং কোরবানি পরিত্যাগকারীদের ওপর অভিসম্পাত করেছেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি কোরবানি করল না, সে যেন আমার ঈদগাহে না আসে।’
কোরবানি যেহেতু আত্মত্যাগের অন্যতম ইবাদত, সেহেতু কোরবানির গোশত সম্পর্কেও রয়েছে ইসলামের সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা। এ সম্পর্কে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। যেমন- কেউ কেউ বলে থাকেন, ‘কোরবানির গোশত জমিয়ে রাখা যাবে না।’ আবার অনেকে বলেন, ‘কোরবানি করে গোশত সাদকা করে দিতে হয়।’ কারো কারো ধারণা- ‘৩ দিনের বেশি কোরবানির গোশত জমিয়ে রাখা যাবে না।’
কোরবানির গোশত সম্পর্কে উল্লেখিত ধারণাগুলো ভুল। কোরবানির গোশত নিজেরা খেতে পারবে, অন্যকে হাদিয়া দেওয়া যাবে এবং সংরক্ষণ করা যাবে। এ ব্যাপারে হাদিসে পাকে দিক-নির্দেশনা রয়েছে-
হজরত সালামা ইবনে আকওয়া (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের যে লোক কোরবানি করেছে, সে যেন তৃতীয় দিনে এমন অবস্থায় সকাল অতিবাহিত না করে যে, তার ঘরে কোরবানির গোশতের কিছু থেকে যায়।’ পরবর্তী বছর সাহাবিগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কি তেমন করব, যেমন গত বছর করেছিলাম? তখন তিনি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন- ‘তোমরা নিজেরা খাও, অন্যকে খাওয়াও এবং সঞ্চয় করে রাখ। কারণ গত বছর মানুষের মধ্যে ছিল অনটন। তাই আমি চেয়েছিলাম, তোমরা তাদের সহযোগিতা করো।’ (বুখারি, মুসলিম)
উল্লেখিত হাদিসে অন্যকে আহার করাও বলতে সমাজের গরিব অসহায়দের দান এবং ধনিদের উপহার দেওয়াকে বোঝানো হয়েছে।
আর কী পরিমাণ গোশত অন্যকে দান-সাদকা বা হাদিয়া দেওয়া যাবে সে সম্পর্কে ওলামায়ে কেরাম একটি মতামত পেশ করেছেন। তা হলো- কোরবানির পশুর গোশত তিন ভাগ করে নিজেদের জন্য এক ভাগ রাখা; গরিব-অসহায়দের মাঝে এক ভাগ দান করা এবং আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে এক ভাগ বণ্টন করা মোস্তাহাব।
ওলামায়ে কেরামের এ নির্দেশনা অনুযায়ী, কোরবানির গোশত বণ্টন করা উত্তম। অতঃপর হাদিস অনুযায়ী, দুর্ভিক্ষ কিংবা অভাব-অনটন না থাকলে যতদিন ইচ্ছা ততদিন কোরবানির গোশত সংরক্ষণ করে খাওয়া যাবে।
হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ থেকে বর্নিত অন্য হাদিসে এসেছে। তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে আমরা মদিনায় ফিরে আসা পর্যন্ত কোরবানির গোশত সঞ্চয় করে রাখতাম।’ (বুখারি) সূএ :ডেইলি-বাংলাদেশ ডটকম
Posted ০৫:০৩ | বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন ২০২৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain