| বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০১৯ | প্রিন্ট
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের ৮৭ শতাংশই ২০ জনের কাছে আটকে আছে। এতে করে প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে ব্যাংকটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, ব্যাংকের এবং গ্রাহকের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এটা ঝুঁকিপূর্ণ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৮ সাল শেষে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেডের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫৯৩ কোটি টাকা। যা বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ২৭ শতাংশ। এর মধ্যে শীর্ষ ২০ জনের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩৯৩ কোটি টাকা। যা মোট খেলাপির প্রায় ৮৭ শতাংশ।
২০১৭ সালে কমার্স বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা ৩০ কোটি টাকা হলেও ১৮ সালে এসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি টাকায়। বর্তমানে ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ ২৭৮ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘শুধু কমার্স ব্যাংক নয়, সব ব্যাংকেরই খেলাপি ঋণের একটি বড় অংশ গোটা কয়েক ব্যক্তির হাতে আটকা।’
ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘বড় ব্যবসায়ীরা বেশি ঋণখেলাপি, এটি আমাদের দেশে একটি কালচার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা মোটেও ভালো বিষয় না। খুবই ক্ষতিকর। বিশেষ করে ব্যাংকের নিরাপত্তা ও গ্রাহকদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের এ প্রতিবেদেন যে ২০ শীর্ষ খেলাপির নাম উল্লেখ আছে সেগুলো হলো- আক্তার এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড এলাইড কন্সার্ন, এফআর জুট ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড, সুরুজ মিয়া স্পিনিং মিলস লিমিটেড, শারমিন জুট বেলিরেস, এমএস এমএন আখতার অ্যান্ড কোম্পানি, এসএ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড, মোস্তফা করপোরেশন, সিদ্দিক ট্রেডিং, তানজুম অটো রাইস মিলস, এইচ এস ইন্টারন্যাশনাল, এমএস রানা অ্যাটায়ার, রিভার অ্যাটায়ার, এমএস আল-ফালাহ নিট গার্মেন্টস, ইনফিনিটি ডেটা অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড, কুমিল্লা সিএনজি ফিলিং স্টেশন, রিপা এন্টারপ্রাইজ, তরফদার রাইস মিলস অ্যান্ড মোহসিন মাস্টার চাল কল, বাংলা লায়ন কমিউনিকেশন লিমিটেড, এমএস এমআই ইন্টারপ্রাইজ ও মল্লিক এন্টারপ্রাইজ।
এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খেলাপি ঋণের পরিমাণ আক্তার এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড অ্যালাইড কন্সার্নের। প্রতিষ্ঠানটির মোট খেলাপি ঋণ ১৫২ কোটি টাকা। তথ্যমতে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে দশবার আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরেও এই ঋণ আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে কমার্স ব্যাংক। এরপরই রয়েছে এফআর জুট ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড, সুরুজ মিয়াহ স্পিনিং মিলস লিমিটেড এবং শারমিন জুট বেলিরেস। প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ যথাক্রমে ৪২ কোটি ৫৫ কোটি এবং ৪২ কোটি টাকা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল খালেক খান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়ে আমরা তৎপরতা বাড়িয়েছি। এখন ব্যাংক যে অবস্থাতে আছে খুব শিগগির এখান থেকে বেটার অবস্থাতে পৌঁছাবো আমরা।’
শীর্ষ খেলাপিদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মিত শীর্ষ খেলাপিদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করছি যাতে তারা টাকাগুলো ফেরত দেয়। এব্যাপারে পুরো পরিচালনা পর্ষদ কাজ করছে। আশা করছি ২০১৯ সালে আমরা ভালো পারফরমেন্স দেখাতে পারব।’
ঢাকাটাইমস
Posted ১২:৫২ | বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০১৯
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain