শনিবার ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলুক্ষেতে লেট ব্লাইট রোগ, দিশাহারা কৃষক

শাহরিয়ার মিল্টন   |   বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট

আলুক্ষেতে লেট ব্লাইট রোগ, দিশাহারা কৃষক

শেরপুর : বৈরী আবহাওয়ায় শেরপুরে আলুক্ষেতে দেখা দিয়েছে ‘লেট ব্লাইট’ রোগ। ক্ষেত থেকে আলু তোলার শেষ সময়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। সার কীটনাশকের চড়া দামের সঙ্গে ‘লেট ব্লাইট’ রোগ দমনে স্প্রে কিনতে বাড়তি খরচ যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে কৃষকের জন্য।

শেরপুর সদর উপজেলার লছমনপুর এলাকার কৃষক মোজাম্মেল হক। এবার এক একর জমিতে করেছিলেন আলুর আবাদ। ভারী কুয়াশা ও বাড়তি ঠান্ডায় শেষ সময়ে লেট ব্লাইটে আক্রান্ত হয়ে চল্লিশ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে তার। তিনি বলেন, আমার প্রতি কাঠায় পাঁচ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। কিন্তু এখন উঠছে মাত্র তিন হাজার টাকা করে। সে হিসাবে একরে চল্লিশ হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে।

শুধু মোজাম্মেল হক নন, গেলো মৌসুমে ভালো দাম পাওয়ায় এবারও অধিক লাভের আশায় আলুচাষে নেমেছিলেন শেরপুরের কৃষকরা। জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় এবার পাঁচ হাজার ২১১ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। কিন্তু চলতি মৌসুমে আলুক্ষেতে লেট ব্লাইট রোগের প্রাদুর্ভাবে দিশাহারা স্থানীয় কৃষকরা। কৃষকরা বলন, আলু রোপণের দেড় থেকে দুই মাসের মাথায় গাছের কা- ও পাতা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গাছ মরে যাচ্ছে। বার বার ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করেও আলুর গাছ বাঁচাতে পারছেন না কৃষকরা। এতে হতাশ হয়ে পড়ছেন তারা। এবার আলু উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

রৌহা এলাকার আলুচাষি কবির মিয়া বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে এবার আলু খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দোকান থেকে নিয়মিত কীটনাশক এনে স্প্রে করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। নকলা উপজেলার চন্দ্রকোণা এলাকার রাজন শেখ বলেন, কীটনাশক কোনটা ব্যবহার করবো, সেটার কোনো সমাধানই পাচ্ছি না। একেতো কীটনাশকের দাম বেশি, আরেক দিকে একদিন পর পর কীটনাশক দিয়ে উল্টো আলু গাছের ক্ষতি হচ্ছে, পুড়ে যাচ্ছে। এবার খুব ক্ষতির মধ্যে আছি।

নকলা উপজেলার ইদ্রিস মিয়া বলেন, শুধু গোল আলুই না, বীজ আলুও লেট ব্লাইটে আক্রান্ত হয়েছে। এবার বীজ আলু নিয়েও বিপাকে পড়তে হবে স্থানীয় কৃষকদের। কৃষক লতিফ মিয়া বলেন, যারা বিএডিসির চুক্তিভিত্তিক চাষি, তারাও এবার চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়বে। তাদের খরচ তোলা নিয়েও শঙ্কায় আছেন কৃষকরা।

এদিকে গত মৌসুমে আলুতে লাভ বেশি পেয়ে অনেকেই এবার ধারদেনা ও ব্যাংক ঋণ করে আলুচাষ করেছিলেন। কিন্তু এ রোগের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। মাঠকর্মীদের পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক এনে প্রয়োগ করলেও, তেমন কাজে আসছে না।

শেরপুর খামারবাড়ীর উপপরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, তীব্র শীত ও কুয়াশার কারণে এ রোগের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। আমাদের কর্মকর্তারা কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। বৈরী আবহাওয়া কেটে গেলে এ রোগের সমস্যা থাকবে না।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৮:৩৪ | বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com