মোঃছৈফুর রহমান
কয়দিন আগে লন্ডনে একটি অনুস্টানে উপস্থিত ছিলাম । মোটামোটি আমাদের বিশ্বনাথের বেশীরভাগ প্রথম সারির মুরব্বীদের উপস্থিতি ছিলো লক্ষ্য করার মত। একজন খুব আস্তে আস্তে আমাকে বললেন,রাগীব আলী সাহেবের ব্যাপারে কি কিছু জানেন? একজন বি এন পির দ্বায়িত্বশীল বললেন ইলিয়াস আলী থাকলে রাগীব আলীর এই পরিস্থিতি থেকে নিস্তার পেতেন। আরেকজন বললেন আস্তে কথা বলুন সময় ভালোনা তার পক্ষে কথা বলে নিজের উপর ঝামেলা না আনাই ভালো। আমি তখনো কিছু বলছিনা । একজন বললেন আপনি তো সাংবাদিকতায় আছেন কি মনে করেন? কেইসটা কি বললাম আমি অতি সামান্য মানুষ কি বলবো এইটুকু বলতে পারি আমরা সিলেটিরা মোটামোটি স্বার্থপর হয়ে গেছি। সেটা আমার নিকট পরিস্কার।
সিলেটের শিক্ষা বিস্তার থেকে আরম্ভ কি করেননি এই মানুষটি!! বিনা পয়সায় পড়াশুনা করে তার কলেজ থেকে বের হওয়া ছেলেদের কলম তো নড়ছেইনা অন্যদিকে যাদের তিনি খাল থেকে উঠিয়ে সভ্যতার আলো দেখিয়েছিলেন তারা আজ কোথায়? যারা উনার নামে বই লিখতো বড় বড় তারা এক পেজ ও আজ লিখেনা। দেশে ছোট বেলা থেকেই দেখছি দেউয়ানী মামলার রায় পেতে পেতে লোকের মৃত্যু হয় কিন্তু এই রায়টা চোখের পলকেই হয়ে গেলো তাছাড়া আর রাগীব আলী সাহেবের তো আর্থিক অবস্থা এতো খারাপ না যে কারো সম্পদ আত্মসাত করার পর কেইসে হারছেন জেনেও কম্প্রমাইজ করে সমস্যা শেষ করার মত টাকা তার নেই । ওটা মানুষ কেন ভূত প্রেত ও বিশ্বাস করবেনা তার মানে তার পুরোপুরি বিশ্বাস ছিল ওটা তারই সম্পদ এবং রায় তার পক্ষেই আসবে কিন্তু রায় তার পক্ষে আসেনি /সিলেটের একদল পার্সেন্টিজ খাওরা লোক তার পিছনে লেগেছিলো এদের হাত নেহায়েত কম লম্বা নয়। এদের ইশারায় অনেক কিছুই হয় আজকের সিলেটে।
যে লোকগুলো এই কাজ করেছে তারাও কোনোনা কোনভাবে রাগীব আলী নামক এই বৃদ্বের করা সিলেটের অসংখ্য প্রতিস্টানের যেকোন একটি থেকে একদিনের জন্য হলেও সুবিধা নিয়েছে বা নিচ্ছে। বুঝলাম এই পিশাচগুলো তাদের স্বার্থের জন্য সব করতে পারে কিন্তু সিলেটের মানুষ ভুলে গেলো কিভাবে এই মানুষটিকে।
মিডিয়ার মাধ্যমে জানি তিনি জেলে। ভুলেই গিয়েছিলাম এতদিন তাকে। গতকাল জানতে পারি তার খবর আমার ভাগিনা শাওনের কাছে। ওর বাবা ব্যবসায়ী মানুষ দাতা হিসেবে ও তার নাম পুরো রামপাশা ইউনিয়ন জানে একনামে খসরুজ্জামান খসরু সকলের প্রিয় মুখ। শিক্ষা বিস্তারে অনেক করেছেন দিয়েছেন দান করে কোটি টাকার সম্পদ । সরকারী বন বিভাগের কাছ থেকে ৩বছরের জন্য লিজ নেন কোম্পানীগঞ্জের নামকরা একটি বিল লোক পাঠালেন নিজে গেলেননা ব্যস্ততার কারনে এবং হার্টের একটু প্রব্লেম ও ছিলো। তার পাঠানো লোকজন জানালো স্থানীয় আওয়ামিলীগ নেতা যিনি লিজ ছাড়াই আওয়ামিলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভোগ করেন প্রতি বছর । আমি দুই সপ্তাহের জন্য দেশে গিয়েছিলাম। তার সাগরদিঘীরপারের বাসায় তখন আমি। খসরু ভাই তখন হার্টের প্রভলেমে ওসমানী মেডিকেলে সাথে তার ছোট ছেলে নাইম। খবর এলো বিলে মারামারি হয়েছে। স্থানীয় আরেক আওয়ামিলীগ নেতাকে খসরু ভাই দায়িত্ব দেন ।
শোনলাম মার্ডার ও হয়েছে কিন্তু এই লোক হাসপাতালে থেকে আসামী হন কিভাবে? তাছাড়া পুলিশের দায়িত্ব যেখানে সরকারী কাগজ যার তাকে সহায়তা করা উল্টো তিনিই বিপদে পড়েন তারই ধারাবাহিকতায় তার ও রাগীব আলী সাহেবের সাথে দেখা হয় কারাগারে। তার ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলে আমায় বিস্তারিত জানায়। আসি আসল কথায় আমাদের দানবীর রাগীব আলী সাহেবের এই বৃদ্ব মানুষটার পাশে না দাড়ালে বিবেকের কাছে আমরা দায়বদ্ব থাকবো। এই শেষ বয়সে এই বেজ্জতিই কি তার প্রাপ্য ছিলো? একটু ভেবে দেখবেন কি?
মোঃছৈফুর রহমান
সাংবাদিক ও কলাম লেখক
ব্রাডফোর্ড ইউ কে।
Like this:
Like Loading...
Related