| বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০১৪ | প্রিন্ট
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্টের এক আইনজীবীর প্যাডে লিখিত হাইকোর্ট বিভাগের একটি ভুয়া আদেশ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অবশ্য সেই আইনজীবী বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। বুধবার এ ব্যাপারে তদন্ত করার জন্য সুপ্রিমকোর্টে বার কাউন্সিলকে ব্যবস্থা নিয়ে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার রানা কাওসার নামে ওই আইনজীবীকে তলব করেন আদালত। আদালতের তলবে দুপুরের বিরতির পর বিচারপতি সামলা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি মো. হাবিবুল গণির বেঞ্চে গিয়ে ওই আদেশ পাঠানোর দায়িত্ব অস্বীকার করেন তিনি।
জানা যায়, রানা কাওসারের প্যাডে পাঠানো আদেশে গতকাল মঙ্গলবার কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা থেকে নির্বাচিত বিএনপি সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান এটিএম মিজানুর রহমানের শপথ স্থগিত হয়ে যায়। অথচ রিটকারীর আইনজীবী নুরুল ইসলাম সুজন বলছেন, সুপ্রিমকোর্টর অন্য কোনো বেঞ্চ থেকেও এ ধরনের কোনো আদেশ হয়নি।
উল্লেখ্য, বিধি অনুযায়ী সুপ্রিমকোর্টর রায়ের পূর্ণ অনুলিপি প্রকাশের আগে আইনজীবীর লিখিত সনদ রায়ের সমকক্ষ বলে বিবেচিত হয়।
বুধবার শুনানির সময় সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের আদালতে রিটটি শুনানির জন্য আছে। এই অবস্থায় আদেশ হয়ে গেছে বলে সনদ চলে গেছে। এটা মারাত্মক অভিযোগ। বিষয়টি সুপ্রিমকোর্টের সব আইনজীবীর সম্মানের প্রশ্ন। যদি রানা কাওসার এটি করে থাকেন, তাহলে তিনি এটি মারাত্মক ভুল করেছেন। আবার যদি তার নামে অন্য কেউ দিয়ে থাকেন তাহলে আরো মারাত্মক।’
উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘এ বিষয়ে মোট তিনটা রিট হয়েছে। প্রথম দুইটাতেও তিনি (রানা কাওসার) সনদ দিয়েছেন। একই ধরনের প্যাডে তৃতীয় সনদটি দেয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে আদালতে রানা কাওসার বলেন, ‘আগের দুটি সনদে আমি বলেছি, রিট হয়েছে, বন্ধের পরে মুভ করবো। কিন্তু আদেশ হওয়ার আগে আদেশ হয়েছে বলে কীভাবে আমি বলতে পারি?’
এরপর বার কাউন্সিলের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিয়ে আদালতকে জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়। একইসঙ্গে আদালত বুড়িচং উপজেলার ৬ কেন্দ্রের পুনভোট চেয়ে পরাজিত প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেনের দায়ের করা রিটটি খারিজ করে দেন।
উল্লেখ্য, গত ২৩ মার্চ বুড়িচং উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মিজানুর রহমান। আর ২০০৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে জয়ী উপজেলা চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন ছিলেন তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী। সাজ্জাদ ছয় কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগে পুনভোটের দাবিতে নির্বাচনে কমিশনে আবেদন করেন। কিন্তু মিজানুর রহমানকে বিজয়ী ঘোষণা করে গেজেট হয়ে গেলে তিনি হাইকোর্টে রিট করেন।
এই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার কুমিল্লার জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে অ্যাডভোকেট রানা কাওসারের প্যাডে লেখা স্থগিতাদের যায়। ওই সময় নবনির্বাচিতদের শপথবাক্য পাঠ করানোর প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু এ আদেশ পেয়ে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের শপথ স্থগিত করা হয়। পরে সেখান থেকে সুপ্রিমকোর্টে খোঁজ নিয়ে তারা জানতে পারেন, এমন কোনো আদেশ দেয়া হয়নি। বুধবার এ বিষয়টিই আদালতের নজরে আনেন বিবাদীর আইনজীবীরা।
Posted ১২:৩৬ | বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin